Sunday, January 17, 2016

সুইসাইড - একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা ও বোকামির পরিচয়


ভীষণ আঘাত পাওয়ার পর একজন ঠিক করেছিল এভাবে আর বেঁচে থাকা যায় না, তাই মৃত্যুর আগে নিজের বেস্টফ্রেন্ডকে কিছু কথা শেয়ার করতে গিয়েছিলো কোনও এক বিকেলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সুইসাইড করে উঠতে পারেনি সে। তার বন্ধু সেই ডুবন্ত সূর্যের আবছা আলোর মধ্যেও তাকে চিনিয়ে দিয়েছিলো এই পৃথিবীর আসল রূপ।
- জানিস ভাই, আর কিছু ভালো লাগছে না।
- কেন রে? কি হল?
- আর বলিস না, রোজ একই ঝামেলা... আর ভালো লাগে বল!
- তাহলে, কি ভাবছিস এখন?
- ভাবছি আর বেঁচে থেকে লাভ নেই। সবকিছু ছেড়ে চলে যাবো। সবাই শান্তি পাবে তাহলে।
- কিসব বাজে বকিস! চুপ কর তো! এক চিন্তা বারবার। তুই মরলে কি হবে জানিস? এসব আর বলবি না একদম।
- কি আর হবে? সবাই শান্তি পাবে একটু। আমিও এতো কষ্ট পাবো না রোজ রোজ, সবাই ভালো থাকবে।
- তুই চুপ কর! শোন একটা কথা বলি...
- হুম বল।
- দেখ, তুই আজ মরবি ভাবছিস। তোর ধারণা তুই মরলে সবাই শান্তি পাবে। আসলে তুই চাস, ওরা তোকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছে তাই তুইও মরে ওদের বুঝিয়ে দিবি তোর অবদান কতটা। এটা তোর ধারণা, তাই তো?
- হুম রে, কি আর করবো বল। বেঁচে থেকে তো ওদের বোঝাতে পারলাম না, তাই মরে গিয়েই না হয় বুঝিয়ে দেবো রে...
- শোন, এই পৃথিবীতে কেউ কারোর নয়। আজ তুই মরবি ভাবছিস, মর। কালকে দেখবি সবাই খুব কাঁদবে। তোকে খুব মিস করবে। সপ্তাহ শেষে দেখবি সবাই সব ভুলে যাবে। তোর প্রেমিকা এক মাসের মাথায় নতুন প্রেমিক জুটিয়ে নেবে। তোর বাড়ির লোক দু-এক মাসের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে উঠবে আর তোকে ভুলতে শুরু করবে। তোর বন্ধুরাও ঠিক একই ভাবে তোকে ভুলে যাবে। আসতে আসতে তোর বেঁচে থাকা জীবনের সব চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করবে সবাই। বছর ঘুরবে, তোর মৃত্যুদিন পালিত করবে সবাই। ফেসবুকে বড়ো বড়ো স্ট্যাটাস দেবে তোকে উৎসর্গ করে, কেউ কেউ প্রকাশ্যে চোখের জল মুছবে। কিন্তু বিশ্বাস কর, সেদিন আসলে সমাজটা একটা থিয়েটারে পরিনত হবে, চারপাশে যা কিছু দেখা যাবে সবই আসলে নাটক আর লোক দেখানো। আরও কয়েকটা বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর দেখবি সবাই বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছে। তখন তোকে কেউ মনেও রাখেনি, তোর স্মৃতিগুলোতে ধুলো পড়ে সেগুলো পরিনত হচ্ছে ডাস্টবিনে। তোর নাম তখন সবার জীবনের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এভাবেই তোর সমস্ত কিছু মুছে যাবে এই পৃথিবী থেকে। তুইও সেদিন মিলিয়ে যাবি অনন্ত আকাশের কোনও একটা কোনায়। সেদিন যদি আকাশের তারা হয়ে এগুলো দেখতে পাস তাহলে তুই সব থেকে বেশি কষ্ট পাবি। হয়তো নিজেকে আরও বেশি করে অপরাধী মনে হবে তোর। তাই কি দরকার এভাবে নিজের বিলুপ্তি নিজে ডেকে এনে? বেঁচে থাক আর এই জীবনটা উপভোগ কর। জীবন তো একবারই আসে বল! এভাবে এটাকে নষ্ট করিস না, সবাই সফল হয় আর তুইও একদিন সফল হবি মিলিয়ে নিস। অনেক বড়ো বড়ো কথা বলে ফেললাম, আমার কথাগুলো একটু ভেবে দেখিস।
- না রে, তুই ঠিকই বলেছিস। মরে গেলে আর কেউই মনে রাখবে না, নিজেকেই কষ্ট দেওয়া। আমি বাঁচবো রে ভাই। নিজের জন্যই না হয় বাঁচবো।

বাস্তব অনুভূতি

প্রতিটি সফল মানুষের পিছনে কোনও নারী বা পুরুষ নয়, একটি ব্যর্থ প্রেমের ভূমিকা থাকে।

বেঁচে থাকা


আনমনা জাহাজ বন্দর ছুঁয়ে যায়,
সার্চলাইটের আলোয় উজ্জ্বল হয় সমুদ্রের রুপ।
আশাহত ওই রাতপাখিদের ব্যর্থ প্রানের কোনায়,
আকাশ চিনিয়েছে আমায় আগোছালো সুখ।

Thursday, January 14, 2016

ভিক্টোরিয়া

বিকেলের রোদ মেখে কত প্রেমিকের হাতের স্পর্শ জড়িয়ে যায় তার প্রেমিকার শরীরে, তার হিসাব রাখে এই মায়াবি উদ্যান। তারই মাঝে জেগে থাকে আমাদের আসা-যাওয়া।

Monday, January 11, 2016

দশ শব্দের লেখা

মৃত্যুর পর এক আত্মা চিঠি লিখেছিলো, ভালো আছি, ভালো থেকো।

Thursday, January 7, 2016

ছেড়ে যাওয়া বান্ধবীকে লেখা এক ব্যর্থ প্রেমিকের চিঠি

শোনো,
যে প্রেম আমার ছিল না, তাকেও খুব কাছ থেকে অনুভব করেছিলাম আমি। ছুঁয়ে দেখেছিলাম তোমার জরাক্রান্ত মনকে আর হৃদয়ের কাঁটাতার ভেদ করে তোমার গভীরে লিখে এসেছিলাম কিছু মূল্যবান শব্দ। যে রাতে তোমার শব্দরা খসে পড়েছিল আমার কবিতা লেখা খাতার ভাঁজে, তখনও অভিমানে অজস্র শব্দ দিয়ে তোমায় আঘাত হানিনি। সূর্যটা খুব নিষ্ঠুর, দিনের আলোয় আমার চোখের জল শুকিয়ে দেয়, কাঁদতে পারিনা। তুমি ভেবেছ হয়তো সবই আমার মিথ্যা অভিনয়, কিন্তু ভোররাতের জোনাকিরা আমাকে দেখেছে ভিজতে, তাদের আলোয় চিকমিক করে উঠেছিলো আমার শুকনো মুখটা। মনে পড়ে তোমার, একসাথে এক লেকের ধারে আমরা সূর্যাস্ত দেখেছিলাম? আজ থেকে অনেক বসন্ত পেড়িয়ে কোনও এক মৃত বিকেলে সমুদ্রের ধারে যখন ব্যালকনিতে কফির কাপে ঠোঁট ছোঁয়াবে, এই নিষ্ঠুর সূর্য তখন তোমায় মনে করিয়ে দেবে পুরনো সেই স্মৃতিগুলো। আলগোছে চুমুক দিতে গিয়ে ঠোঁটটা হয়তো পুড়িয়ে ফেলবে একটু, কিন্তু বুকের ভিতর তোমার শিরশিরানি ঢাকা দিয়ে দেবে সেই জ্বালাকে। তোমার বেডরুমের আয়না তোমাকে বারবার অপরাধী প্রমান করবে। সেই বিকেলে চোখ ভিজিয়ে ঝাপসা আলোয় দেখতে পাবে আমার অজস্র প্রতিচ্ছবি। খুশী থেকো তোমাকে এরকম একটা বিকেল উপহার দিলাম বলে।
                                                                             ইতি – তোমার এক ব্যর্থ প্রেমিক

Sunday, January 3, 2016

ঘুমরাতের বন্ধু



প্রিয়া,

আজও আবছা মনে আছে তোমার মুখটা তোমার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আমার স্বপ্নে, আর দেখা হয়েছিল ঘুম ভাঙ্গা চোখে। আমাদের বন্ধুত্বটা হয়তো স্থায়ী ছিল মাত্র দুই সপ্তাহ, কিন্তু তারই মাঝে তোমার আর আমার মধ্যে যে কথাগুলো হয়েছিল, সেগুলো আজও মনে রেখেছি আমি। তোমার কথা আজও ভাবি আমি, জানিনা কোথায় আছো। কিন্তু তোমার কথা ভেবে খুব কষ্ট হয় আমার, আমাদের মধ্যে এই দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ার জন্য তো আমিই দায়ী। যেই রাতে তোমার সাথে শেষ দেখা হয়েছিল আমার, মনে আছে সেদিন দুজনেই খুব কেঁদেছিলাম। তারপরেই রাতের আলো আধারের খেলায় কোথায় যেন মিলিয়ে গেলে তুমি। পরের দিন সকালে আর দেখা হল না আমাদের। সেদিন জানি অনেক কষ্ট পেয়েছ তুমি, আর আমি উপভোগ করেছিলাম বাড়ির পূজাটাকে। ভাবতে পারিনি এই পূজাটার মাধ্যমেই নিজের একজন ভালো বন্ধুকে হারাতে চলেছি আমি। পরে যখন রাতে শুয়ে শুয়ে ঘুম চোখে মনে পড়ল তোমার কথা, তখন জানি অনেক দেরি হয়ে গেছে। আমার জীবন থেকে বিদায় নিয়েছ তুমি তখন। চাইলেও আমরা আর কোনোদিন একে অপরকে দেখা দিতে পারব না। চোখের জলেই স্মৃতিচারণ করে নিজের ভুলটাকে শুধরে নিতে হবে বোধহয়। তোমাকে তো আমরাই বিদায় দিলাম, আসলে সমান্তরাল হলেও তোমার অস্তিত্বকে হয়তো আজও আমরা মেনে নিতে পারিনি এই জগতে। তোমার পুনর্জীবন লাভের কামনা করি।


                 ইতি – তোমার অর্ধমৃত সেই বন্ধু