Sunday, February 14, 2016

প্রেমতরঙ্গ

এক কুয়াশা ভরা রাতের আলোয় বেড়িয়েছিলাম অসীমে মিলিয়ে যাওয়া পথগুলো হেঁটে দেখার জন্য, কানে হেডফোন লাগিয়ে একা মনে কবিতা বাঁধতে বাঁধতে এগিয়ে চলছিলাম। চারদিক থেকে অট্টহাস্যগুলো আমাকে চেপে ধরেছিল প্রায়, পথের বালি আর ইটের গুড়োগুলো আমার দিকে তাকিয়ে যেন হাসাহাসি করছিলো। প্রেম-ভালোবাসা বড়ই কঠিন একটা রোগ, জীবনে অনেকবার আসে, কিন্তু প্রতিবার যখন চলে যায়, রেখে যায় একটা গভীর ক্ষতচিহ্ন। বছরের পর বছর কেটে যায়, তবু এই চিহ্নগুলো একটুও মেলায় না, কখনও  বা সময়ের ব্যাবধানে আরও গভীর হয়ে ওঠে। না পাওয়া চাহিদাগুলো আরও বেশি করে চেয়ে থাকে এক দৃষ্টিতে, জীবনের সমস্ত রক্তকোষে বিষিয়ে যায়। মানুষের বেঁচে থাকা হয়ে ওঠে আরও  কঠিন। অতীতের শব্দগুলো হানা দেয় আধঘুমে আচ্ছন্ন চোখের কোনায়, স্মৃতিগুলো প্রতি নিয়ত আরও জীবন্ত হয়ে ওঠে। না পাওয়ার ইচ্ছেটা বুকের ভিতরে ঢেউ তুলে দেয় আর সেই ঢেউ ধেয়ে আসে কোনও এক নিঃসঙ্গ নাবিকের দিকে। সবকিছু ছারখার করে চলে যায় আর রেখে যায় আরও একটা নতুন ক্ষতচিহ্ন। সেই চিহ্নগুলোর জ্বালা যন্ত্রণা নিজেকে সামলে উঠতে হয়, কখনও বা ঘুমহীন চোখে কবিতা হয়ে নেমে আসে মাঝরাতে। ধর্মবিজ্ঞানীরা মনে করেন সবই জন্মলগ্নে লেখা, কিন্তু আসলে এই মনই জানে এগুলো চোখের ভুল। সেদিন যদি চোখটা কল্পনা শক্তি দিয়ে না ভাবতো, তাহলে হয়তো এই মায়াবী সম্পর্কগুলো কখনই আকর্ষণ করতো না। তবুও এই পথ পরে থাকে সময়ের দূরবীন সঙ্গে নিয়ে, গতকাল আমরা যে পথে হেঁটেছি, আগামীকাল আমাদের জায়গায় নতুন কোনও যুগলকে দেখবে বলে। হয়তো আজকের মানুষগুলো আগামীকালও হাঁটবে ওই পথে, কিন্তু বদলে যাবে তাদের বন্ডিংগুলো। এভাবে কত ম্যাট্রিক্সের অঙ্ক কষে যায় এই পথ তার হিসেব রাখে নক্ষত্রকুঞ্জের প্রতিটি জ্যোতিষ্ক। আমরা কেবল সময়ের ঢেউয়ে ভেসে আসা অতীতের জীবাশ্ম মাত্র।

No comments:

Post a Comment