Sunday, February 25, 2018

জীবন চুরি

সমুদ্দুরের গল্প শোনো
ঢেউয়ের ভিড়ে লুকোচুরি,
একটা ঢেউয়ে ঝিনুক কোড়ায়
অন্য ঢেউয়ে জীবন চুরি।

ফিরে আয় তুই

যে প্রভাতে আজি এ শহরে মন
নাম লিখে গেছে গাড়ি,
সেই পথগুলো ধুলো মেখে গায়ে
ভুলে গেছে তোর বাড়ি।
আমি হেঁটে চলি কাগজের ফাঁকে
ঠিকানা বদলে গেছে,
আজ আকাশের নরম দু'চোখে
পূর্ণিমা লেগে আছে।
তোকে কিছু কথা বলবো ভেবেছি
সরিয়ে রেখেছি মনে,
আজ রাতে কেউ গল্প শোনে না
ভাঙা এই টেলিফোনে।
এভাবেই দিন কেটে যায় রোজ
তোর চিঠি পড়ে পড়ে,
আরও একবার ফিরে আয় তুই
ফাগুন হাওয়াতে বয়ে।

Saturday, February 24, 2018

জন্ম নতুন

জ্বলবো আবার নিভেও যাবো
রাতের আকাশ অন্ধ করে,
তোর পথেতে মোম জ্বালাবো
ফাগুন হাওয়ায় মুক্ত হয়ে।
আমি কে তুই জানবি না, নাকি
জানতে চাস না ইচ্ছে করে,
এখনও কি তুই আমায় খুঁজিস
জোনাকির ওই ধরপাকড়ে?
তোর জন্যেই বাঁচছি জীবন
আসছি ফিরে নতুন করে,
এই পৃথিবীতে তোর মায়াতেই
এসেছি এবার জোনাকি হয়ে।
চিনতে পারলে আটকে রাখিস
তোর ছোঁয়াতে বন্দী করে,
নয়তো আবার প্রান হারাবো
একলা রাতে পাথর হয়ে।

Friday, February 23, 2018

বৃষ্টির প্রেম

দিনের শেষে কালবৈশাখী
তোমার আমার শহর জুড়ে,
বৃষ্টির প্রেমে ভাসবে মাটি
দুইটি দেহের কবর ছুঁয়ে।

Thursday, February 22, 2018

ক্লাসরুম

আমায় যখন বিচার করো
আমার রূপের নিন্দা করে,
আমায় কেন খোঁজো তুমি
ক্লাসরুমের ওই অন্ধকারে।

প্রতিদান

ভাবছ এখন নেই বলে আমি
যা খুশী তাই বলবে ওকে,
যখন তোমার কঠিন সময়
চোখ বুজে তুমি ডাকবে কাকে?

সহ-সৈনিক

আমার কাঁধেই জন্ম নিচ্ছ
বাড়ছ তোমার জীবন পাতায়,
যতই আমায় মন্দ বাসো
তোমার শব্দ আমার খাতায়।
আমার সাথেই চলছ এ পথ
তোমার যুদ্ধের প্রতি বাধায়,
যুদ্ধে জয়ী হলেই তুমি
কামান দাগবে আমার মাথায়।

Sunday, February 18, 2018

দূর অজানার দেশে

প্রত্যেক সকালে উঠে মুখের কাছে এক কাপ চা/ কফি না হলে দিনটা ঠিক শুরু হয় না, আর ঘুমনোর আগে ডিনারে অবশ্যই ভালো কিছু চাই-ই চাই! এটাই আমাদের অভ্যাস, এভাবে দুটো সূর্যোদয়ের মাঝের ২৪-টা ঘণ্টা বেশ নিশ্চিন্তেই কাটিয়ে দিতে পারি পরের সকালের bed tea-টা হাতে পাওয়ার আশায়। এটাই হয়তো আমার কাছে necessity, আর luxury-টা তো আরও অনেক বেশী কিছু। আমরা হয়তো ভাবতে ভুলে যাই আমার এই necessity-টাই কোনও এক মানুষের কাছে হয়তো ভীষণ luxury-র থেকে কম কিছু নয়। হ্যাঁ, আজ তবে সেই মানুষগুলোর কথাই একটু আলোচনা হোক।
প্রত্যেক বছরের শেষে যখন শীতটা বেশ অনেকটা দিনের আলো চুরি করে ফেলে, ঠিক সেই সময় আমরা বেড়িয়ে পড়ি দূর অজানার সন্ধানে। আমরা মানে এখানে The Front Point-টীম। যে অজানার প্রান্তরে গিয়েই আমরা পড়ি, কিছু উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিবার যাই আমরা। তার মধ্যে প্রাথমিক কিছু উদেশ্য হল, ১) চেনা জগতের বাইরে নিজেকে পরিচিত করে তোলা, ২) নিজের কাজটা নিজেই গুছিয়ে নেওয়া, ৩) যে স্থানে আমরা যাচ্ছি সেখানকার সংস্কৃতি এবং মানুষের দিনযাপন সম্পর্কে একটা জ্ঞান অর্জন করা এবং তাদের দিকে কিছুটা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। এই আমাদের উদ্দেশ্য এবং এটার মধ্যেই আমাদের সমস্ত ভালোলাগা মিশে থাকে।
সেই মানুষগুলোর সাথে যখন আমরা কথা বলতে যাই, অনেক বিষয়ে খেয়াল রেখে আমাদের কথা বলতে হয়, কখনই যেন তারা আমাদের থেকে নিজেদের মধ্যে কোনও দূরত্ব খুঁজে না পান। এ ক্ষেত্রে নিজে কতটা স্মার্ট, সেসব দেখাতে গেলে দূরত্ব বাড়ে, সেই মুহূর্তে গাম্ভীর্য কমিয়ে মুখের হাসিটাই আমাদের শ্রেষ্ঠ এক্সপ্রেশন। এভাবেই গল্প জমে ওঠে, তাদের বেঁচে থাকা, সুখ দুঃখের কথা শেয়ার করেন আমাদের সাথে। তারা গল্প করেন কীভাবে ফাগুনের মহুয়ায় তাদের আসর জমে ওঠে দখিণা হাওয়ার কোলে, তাদের উৎসবের দিনের মুহূর্তগুলো কতটা প্রিয়, বন্য জন্তুর উৎপাতে সারা বছরের ফসল নষ্টের ব্যথা, বিয়ের আগে পণ দেওয়ার রীতি নীতি, ইত্যাদি অনেক কিছু। কাউকে ঘাঁটানো আমাদের স্বভাব নয়, দিন বদলের স্বপ্ন দেখাতে আমরা যাইনি ওখানে, তাই প্রতিবাদ করে তাদের সংস্কৃতির বদল ঘটানোর চেয়ে আমরা বরং অবাক হয়ে গল্প শুনি আর হাতের কাগজে রিপোর্ট তৈরি করি। এভাবেই সময় ফুরিয়ে আসে, আমাদের ফিরে আসতে হয়, কেউ কেউ তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিজেদের টিফিনের টাকা জমিয়ে বাচ্ছাদের বই-খাতা কিনে দেয় আবার কেউ কেউ চেষ্টা করে নিজেদের ছোট হয়ে যাওয়া পুরাতন জামাকাপড় দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর। এভাবেই একটা ক্যাম্প শেষ হয়ে যায়, আবার অপেক্ষা এক বছরের, বাড়ি ফিরে ক্যামেরায় ধরে রাখা সেই মানুষগুলোর মুখের হাসি আমাদের এক পরম শান্তি উপহার দেয়। luxury আর necessity-র সংজ্ঞাটা আরেকটু ভালো করে পড়ে ফেলি কোনও অদৃশ্য অধ্যায়ের পাতা থেকে আর শিক্ষাটা জমিয়ে রাখি বুকের ভিতরে উত্তাপের ছায়ায়।

আমার ঠিকানা

আমি যেখানে থাকি, তার পূর্বে একটা বিশাল পাহাড়, প্রত্যেক সকালে আমাকে অন্ধকার করে রাখে। আমি কিছু বলি না, এই আছিলায় একটু বেশীক্ষণ ঘুমোতে পারি। প্রতি ভোরে ওপাশ থেকে শুনতে পাই একটা খরস্রোতা নদীর শব্দ, বয়ে বেড়ায় বুকে নিয়ে আমার সমস্ত অভিমান আর তার চিৎকার আমার কাছে খুব একঘেয়ে, যারা ছেড়ে যায় তাদের কাছে ভীষণ মধুর। এখানেই আমাকে থাকতে হবে, অতএব এই শব্দ, এই ছন্দ সব নিয়েই আমার লেখা, সব নিয়েই আমার দিন গোনা। আমার জীবনে কোনও প্রেম নেই, এই ঘরের মাঝখানে আমি একা থাকি, সঙ্গে কিছু ছারপোকার কামড় আর লতা পাতার উপর ভর করে বেড়ে ওঠে আমার জীবন। কোনও এক বিকেলের হলুদে রোদ ছুঁয়ে কেউ আমাকে বলে গিয়েছিলো পাহাড়ের ওপারে যেতে। তাহলে কি সেখানেই আমার সমস্ত না পাওয়া লুকিয়ে? কিন্তু আমি নিতান্তই মূর্খ, কি পেয়েছি আর কি পাইনি সেটাই জানি না। এই প্রশ্নের মাঝে ভুলে যাই তার নাম, কেটে যায় অনেক দিন। আমি আবার একা। পরে কোনও এক ভোরের পাখির মুখে শুনি পাহাড়ের ওপাশে লুকিয়ে আছে সমস্ত অহংকার, তা সে পাহাড় জয়ের নাকি নতুন পৃথিবীর আমি জানি না। যেতে ভয় পাই, পাছে আমি গ্রাস হই। নিজের পরিসরে থাকি, হিজিবিজি কেটে লিখে রাখি আমার মাটির ঘরের দেওয়ালে সমস্ত ভালোলাগা। প্রত্যেক রাতে স্বপ্নে দেখি এক অজানা মুখ প্রশ্ন করে, এভাবে আর কতদিন? আমি কিছুই বলতে পারি না, স্বপ্নের শেষ এখানেই। এটাও কারোর স্বপ্ন হতে পারে, নিজেই ভাবি আবার অন্য কাজে মন দিই। যাই হোক, আমার চার দেওয়ালে এখনও সভ্যতার ধোঁয়া এসে পৌঁছয়নি। আমি এখানে মাটির গন্ধেই বন্দী থাকতে ভালোবাসি। রাত হলেই বাইরে খাটিয়া পেতে শুয়ে পড়ি আকাশের বুকে রঙ দেখবো বলে, সবাই বলে রাতের আকাশ ভীষণ কালো। কই, আমি তো স্পষ্ট দেখতে পাই কারা যেন তারা সাজিয়ে ছবি এঁকে দিয়েছে রঙ বেরঙে। ওই তো একটা যোদ্ধা পায়ের কাছে কুকুর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ওই তো দূরে সাতজন ঋষি বসে কিছু একটা গভীর চিন্তা করছে। নিতান্তই মূর্খ আমি, কারোর নাম জানি না। শুধু জানি, যে রাত্রে আমি পাহাড় টপকে ওপাশে যাবো ভোর দেখবো বলে, সেদিন রাত্রেই এই আকাশের প্রত্যেকটা তারা খসে পড়বে ওই পাহাড়ের মাথায়। অতএব আমাকে এভাবেই চলতে হবে। আজেবাজে লিখলেই লেখক হওয়া যায় না, ঠিকানা বদলে ফেলতে গিরগিটি হওয়াটা প্রয়োজন। আমি জানি তা কোনোদিনই পারবো না, সুতরাং এটাই আমার ঠিকানা আর ওই যে গল্পকার খরস্রোতা নদী, আমি তারই শ্রোতা।

Saturday, February 17, 2018

শূন্য রাজপ্রাসাদ

যতদূর প্রেম তোমার প্রিয়
তার অর্ধেক আমায় দিও,
আমার বুকে শূন্য রাজপ্রাসাদ,
ডাক পিয়নে খবর নিও,
একটু বাঁচার ইচ্ছে দিও,
বৃষ্টি ভেজা আমার রাস্তা-ঘাট।

অন্য দেশ

আমাদের অন্য দেশ,
এভাবেই লাগছে বেশ,
চল আকাশ খুঁজে হারিয়ে যাই,
যেখানে তোর আবেশ
আমারও লাগবে বেশ,
সেখানে আমি রোজ হারাতে চাই।

Monday, February 12, 2018

ছায়াপথ

যখন তোমার সূর্য মাথায়
তখন আমি প্রখর রোদে,
পুড়ছি তাপে ভীষণ ব্যথায়
তোমার উপর ছায়ায় স্রোতে।
লালের আভা বুকে নিয়ে
দিনের শেষে আকাশ শুয়ে,
ছায়ার শরীর বাড়ছে ধীরে
তোমার আমার হৃদয় ছুঁয়ে।
এখন আমি অনেক দূরে
যাচ্ছি হেঁটে আলোর ভিড়ে,
যতই দূরে যাই না আমি,
আমার ছায়া তোমায় ঘিরে।

Saturday, February 10, 2018

ধূসর মায়া

বইয়ের ভাঁজে শুকনো গোলাপ
গন্ধহীন এক ধূসর মায়া,
অনেক প্রমিস ভিড়ের আড়ালে
শহর জুড়ে প্রেমের ছায়া।

Thursday, February 8, 2018

শেষ চুম্বন

শেষ চুম্বন মিলিয়ে গেছে আমার ঘরের এক কোনে,
ক্ষতয় মোড়া মিথ্যা প্রেম আজ পড়ছে চুঁয়ে তোর মনে।

বাঁচার তাগিদ

এভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় না,
আঙুলের প্রেমে তালা ঝুলছে,
তোমার হাত অন্য হাতে বন্দী। 
আমি এখনও স্বপ্ন দেখি বাঁচার, 
যেভাবে দুটি মশারির আত্মা 
জুড়ে গিয়েছিলো একটি ঘরে। 
আমার শহরে বসন্ত আসেনি, 
কোকিলের পালকে চিঠি আসে 
আমাকে ফিরে যেতে বলার। 
আমার অপেক্ষায় বিশ্বাস নেই, 
নরম হাতের আদরে গাল মুছবো, 
রুমালের প্রেম জাগবে দু'চোখে। 
একটিবার আমাকে সত্যি বলবে, 
তুমি কি আসবে আজ রাত্রে? 
তোমার ফেলে যাওয়া অন্ধকার 
আমি সযত্নে তুলে রেখে দিয়েছি 
আমার ডায়েরির সাদা শূন্যতায়। 
এসো, চুপিসারে নিয়ে চলে যাও, 
আমার গালে দুঃখের ভাঁজ ছুঁয়ে 
রেখে যাও তোমার অস্তিত্বের দাগ। 
আমার এখানেই থাকার কথা ছিল, 
মাঝরাতে উড়োজাহাজের গর্জন, 
তুমি চলে গেছো অন্য ঠিকানায়। 
পরের সকালে আমি রোদ গুনি, 
প্রেম খুঁজি এই সভ্যতার কোলে, 
বেঁচে আছি, বেঁচে থাকবো বলে।

Tuesday, February 6, 2018

নতুনের দরবারে

বাসবে একটু ভালো? আমিও বাসবো।
তোমার পিঠের চাদরে রাখবো হাত,
কাঁধের উপর শুইয়ে রাখবো মাথা,
পারবে কি ভুলিয়ে রাখতে আমায়?
আমার অতীতের পুরনো বুকের ব্যথা।

অধিকার বোধ

আমি 'না' বলার অধিকার হারিয়েছি,
খুঁজে দেবে?
দুঃখিত, আমি তো নিরস্ত্র সৈন্য,
তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাও,
আমি আহতের সেবা করতে ব্যস্ত।