মনমরা শীত আর তির্যক সূর্য, দুজনেই একে অপরকে চায় কিন্তু জীর্ণ পলাশের ডালে লাল ছড়িয়ে পড়ে আর জন্ম দেয় নতুন মুহূর্তের। মুছে যাওয়া বিকেলের দৈর্ঘ্য বাড়ে, ওরা আরও বেশীক্ষণ একটু নরম রোদে রঙ মাখতে পারে। মগজে তখন শব্দের লাইব্রেরী অথচ নিয়ম মেনে নীরবতায় মগ্ন দুটি অচেনা হাত, যারা একে অপরকে স্পর্শ করতে চায় কিন্তু সাহস পায় না। এভাবেই বেশ কিছুটা সময় কেটে যায়, আকাশের বুকে বেগুনি তরী ভেসে আসে অজস্র জোনাকি আর তারাদের সাথে নিয়ে। দুজনের ঘরে ফেরার তাড়া, একজন উঠে দাঁড়ায় ব্যাগ কাঁধে নিয়ে, অপরজন আলতো শরীরে প্রস্তুত হয় খুলে রাখা চটিতে পা রাখার। পলাশের অভিমান ভাঙে, ধুলোমাখা চটির গর্ভে খসে পড়ে এক সদ্য বিকশিত পাপড়ি। মানুষটি খুলে রাখা সেই চটিতে পা রাখতে গিয়ে হঠাৎ থমকে যায়, শক্ত হাতে কাঁধে ভর দেয় পাশের মানুষটির। এটাই তাদের প্রথম স্পর্শ, যার সাক্ষী একটি শয্যাশায়ী পাপড়ি আর দখিণা হাওয়া। এরপর তারা হাঁটতে শুরু করে, অনন্তকাল যাবৎ হেঁটে যাবে এই পথ। সন্ধ্যার তরীতে ভেসে আসা জোনাকিরা আজ উড়তে শিখে গেছে, পথের অভিমুখে উড়ে বেড়ায় আর আঁধারের শূন্যতা মুছে আলোকিত করে তাদের পথ। এভাবেই প্রত্যেক শীতের শেষে ঋতু বদলায়, দুটি মানুষকে একসাথে চলার শপথ করিয়ে বেগুনী তরীতে হলুদ বিকেলের শেষে মিলিয়ে যায় বসন্ত।
No comments:
Post a Comment