Monday, December 31, 2018

বন্দী মন

ভালোবাসা বাড়ে শিকল ছাড়িয়ে বন্দী মনের এক কোণে,
তোর আবেশে তাকিয়ে থাকা নদীর কথাও কেউ শোনে।

অবশেষ

মিশে যাবো ধূলিকণা অজুহাতে চোখে ধুয়ে,
সবশেষে চেয়ে দেখো আজও একা সে আছে শুয়ে।

Thursday, December 27, 2018

আগন্তুক

নূতনে জোয়ার আসে পুরানো ভাঁটার টানে,
কথায় আবেগ ভাসে হারানো শেষের গানে।

Sunday, November 25, 2018

সেই রোদ্দুর - গান

সেই রোদ্দুর একটা সকাল, অনেক গল্প বাকি,
সেই মেয়েটা আড়াল পেলেই তোর সাথে দেয় ফাঁকি,
সেই কথার পাগলামি আর খুনসুটি ভেজা শহর,
সেই গল্পের শেষ নেই শুধু শুরুর হাজার খবর,
তোকে দেওয়া দিনগুলো গল্পে রঙিন হয়ে ফিরে আসে বারবার,
কথার চোরাস্রোত কিংবা প্রতিরোধ, তোকেই চাই প্রতিবার।

মিলিয়ে যাওয়া ইচ্ছে - গান

যদি নেমে আসে সন্ধ্যাতারা
তোমাকে বলে যায় গোপনে,
কোন রজনীতে আমাদের গল্পগুলো
এক হয়ে যাওয়ার কথা আছে,
সুমধুর এক জ্যোৎস্না রাতে
বাঁশিওয়ালা সূর তোলে পবন ডানায়,
মিলিয়ে যাওয়া ইচ্ছেগুলো জেগে ওঠে
সেই রাতের কোলে তোমার গভীরে অশ্রু হতে।

Thursday, November 1, 2018

প্রেমের পরিসর

স্বাধীন দু'চোখ চায় তাকিয়ে থাকতে
তোর নালিশ জমা ঠোঁটের আদলে,
আমি জানি ভীষণ অভিমান জমে
তোর চোখের কোণের ভেজা কাজলে।
এভাবেই প্রেম বাড়ে প্রতি ভোরে
তোকে ঘিরে শীতের নরম রোদের আদরে,
কখনও বা রাত্রি ভাঙা ঘুমের আলিঙ্গন
আবার কখনও ভালোবাসার উষ্ণ চাদরে।
বেড়ে উঠুক আমাদের প্রেম মিথোজীবী হয়ে,
ভরে যাক সমস্ত শূন্যতার করিডর,
রাত্রের শহর ভরে উঠুক কাঁচা আলোয় ভিজে
প্রসন্ন হোক আমাদের প্রেমের পরিসর।

Thursday, October 25, 2018

ডাক

বহুবার চেনা অচেনার ভিড়ে
ডাক আসে এই শহর ছাড়ার,
আমি চাই, এই উৎসব মাঝে আরও একবার
ডাক আসুক তোমাকে কাছে পাওয়ার।

Friday, September 28, 2018

অনুভূতি সিরিজ - ৫

এরকমই একটা রাত ছিল,
আমাদের প্রথম বাক‍্যালাপ,
এই রাতে সবই ভিজলো জলে
আমাদের শেষ সংলাপ।

Thursday, September 13, 2018

মিশ্রিত মোহনা

ভালোবাসাটুকু বন্দী করে আর একটা দিন কাছে আয়,
রাঙিয়ে দেবো প্রেমের পাহাড় নীল নদীর ওই মোহনায়।

Wednesday, September 12, 2018

সূর্যাস্তের রঙ

দেখা হবে আবার অনেক বছর পর
তুই হেঁটে যাবি এক অচেনার বেশে,
সেখানে সূর্যাস্ত রঙে ভিজে শৈশব
আর বিচ্ছেদ মিশে গোধূলির শেষে।

Tuesday, September 11, 2018

অনুভূতি সিরিজ - ৪

অতএব আমাদের মাটিতে পা রেখেই এগোতে হবে
ডানা মেলে ঈগল হতে গেলে মুখ থুবড়ে পরবো নিশ্চিত,
উচ্চতা দেখতে ভালো লাগে আসলে মৃত্যুর হাতছানি।

Monday, September 10, 2018

বিরহের রীতি

রোদ ফুরিয়ে একদিন ভীষণ কুয়াশা
তুমি নেমে যাবে ছায়া শীতে চোখ ভিজে
অপেক্ষা জমবে জীবনের প্রতিটি ধাপে
তোমাকে না পাওয়ার এক অরণ্য ব্রিজে।
অজস্র ধূলিকণা মাখা লাল গোধূলির তীরে
প্রতিফলিত হবে এক উষ্ণ চুম্বনের স্মৃতি
সেখানে পথ মুছে থেমে যাবে সময়ের খাতা,
স্তব্ধতা ভেঙে মেনে নিতে হবে বিরহের রীতি।

Sunday, September 9, 2018

একটা একটা করে - গান

একটা একটা করে চিনছি দিন
আরেকটা দিন ভেজা শহর,
একটু একটু করে গলছে মন
আরেকটা বুক জমে পাথর।
তুমি গল্পের খাতা খুলে
মহাদেশ পাড়ি দিলে
নামলো না সেই পরী তোমার গল্পে
তবু বুক ঠুকে ভালোবেসে যাও,
আমাকে চাইলে ফিরিয়ে নাও।

(not the complete lyrics)

Saturday, September 8, 2018

শেষ বাসস্টপ

রঙে রঙে নেশা লাগে চোখে
মনে পড়ে যায় সেই পুরনো কাগজ
যেখানে লেখা টুকরো খেয়াল
আর ছিটে ফোঁটা কিছু বৃদ্ধ মগজ,
সবাই মিলে ভিড় করে এসে
সকাল রোদে আমার মনের কোণায়
খবরে স্ট্যাটাসে জমে থাকা গোল
ভেঙে চলে যায় আমার আঙুল ছোঁয়ায়।
ভেঙে দিতে চাই এই কঠিন রাত্রি
তোমার বুকের ভিতর মোমের শিখায়
উষ্ণতা জমে রাতে নতুনের প্রতি
তুমি ভালোবেসে থেকো আমার লেখায়,
আমি চলে যাবো ঠিক অন্য রুটে
কখনও খুঁজো না আমায় কিছু যান্ত্রিক স্টকে,
তুমি তো কেবল গল্পটা লিখেছিলে
আমাকে নেমে যেতে দাও ওই শেষ বাসস্টপে।

Thursday, August 30, 2018

অনুভূতি সিরিজ - ৩

মনখারাপের কোনও একক নেই
যতটা দূরত্ব বাড়ে ততটাই সত্য,
ইতিহাস সাক্ষী প্রতিটি প্রেমের
কোনও এক সন্ধ্যায় পতন ঘটতো।
আমরাও তাই সরে গেছি দূরে
শেষ রাতের ওই স্বপ্নের ভোরে,
যেখানে সময় শেষ কথা বলে
ধ্রুবতারা একা গল্পটা শোনে।

Sunday, August 26, 2018

কত বার - গান

কত কত কত কত বার বার বার
আবেগে জমেছে যে পাহাড়,
কত কত কত কত বার বার বার
লাগেনি এ টেলিফোন, রং নাম্বার।
চেয়ে দেখি তোমাকে
গ্যালারিতে কে বসে
স্ক্রিনে ছোঁয়া আঙুল তাই মন ছুঁতে চায়,
কত কত কত কত বার বার বার
চোখেতে তোমার ছবি নেমেছে আষাঢ়।

হাতে শুয়ে তুলি, ক্যানভাসে ঘুড়ি
আঁকাবাঁকা পথে চলে যায়,
বুকে জমে পাথর আর ভেজা জামা কাপড়
লাল রোদে মন যে হারায়।

(It's not the complete lyrics)
follow me at Facebook

Monday, August 13, 2018

মনখারাপের গোপন আহার

হয়তো আমরা ফুরিয়ে যাচ্ছি
সকাল বিকেল অনেক রাত্রি,
চোখের আঁধার খুঁজছে কারণ,
তোমার নামটা বলা বারণ।
আমার প্রেমের যন্ত্রণাতে
তুমিও থেকো অন্য রাতে,
আমার কথার শব্দ পাহাড়
মনখারাপের গোপন আহার।

Wednesday, August 8, 2018

অচেনা মন

আমাকে মনে রেখো
বিঁধে রেখো তোমার বুকে,
ধুসর স্মৃতির মায়ায় না জড়িয়ে
তুমিও থেকো ভীষন সুখে।
যদি কোত্থাও দেখা হয়ে যায়
চিনবে না তুমি আমায় চিনেও,
পথ এড়িয়ো চোখের আড়াল
মুছে দিও তোমার বিরক্তিতেও।

Monday, July 16, 2018

অনুভূতি সিরিজ - ২

শোনো শেষ বলে কিছু নেই,
যদি ভালো থাকো,
বেড়ে ওঠো সে বুকেই...

অনুভূতি সিরিজ - ১

ওই আলোকবর্ষ দূরে,
দেখো তোমার ভিতর আমার আবেশ
মনের প্রাচীর জুড়ে...

Saturday, July 14, 2018

মায়াবী চুম্বন

তোমার প্রতিটি চুম্বনে আমার দীর্ঘশ্বাস ভালোবাসা,
আঁধারে মোমের ছোঁয়ায় বাড়ে মায়াবী আলো-আশা।

Thursday, July 12, 2018

শেষ অধিকার

তুচ্ছতা তোমার মনের ভুল,
চেয়ে দেখো সবার চোখের আড়ালে
জেগে আছে এক স্বপ্নের হিমালয়,
যেখানে তোমার পৌঁছতে এখনও অনেক বছর
ততদিনে হয়তো বরফ গলবে এই কঠিন পথে।
দূরে নীল পাহাড়ের বুকে তুমি শুয়ে থেকো,
পলিথনে ভরে রেখো তোমার সমস্ত অহংকার,
জেনে রেখো কোনও সিংহাসনই কিন্তু স্থায়ী নয়,
তরলের মতো আমাদের ভাগ্যও ভীষণ নিরাকার,
হয়তো তুমিও একদিন হারাবে তোমার শেষ অধিকার।

Wednesday, July 11, 2018

শূন্যতার প্রবেশ

যদি কাছে আসতে চাই?
আঁকড়ে বেঁচে থাকি দুহাতে তোমায় নিয়ে,
ভীষণ রাত্রে তোমার কপালের ভাঁজে একটা চুম্বন,
সব কথা বলা হয়ে ওঠে না,
ইশারায় আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি সব আবেগ,
কিছুটা শূন্যস্থান আর বাকিটা তোমার অভিমান।

Saturday, July 7, 2018

কবিতা নয় কেবল অনুভূতি

সাগর মাঝে এক পাহাড় চূড়ায় নির্জন রাত্রি,
হয়তো সেথা তোমার কেবল আমিই সহযাত্রী,
হয়তো তোমার কপাল ছুঁয়ে একটা স্নেহচুম্বন,
কিংবা তোমার বুকে বেড়ে ওঠা ঘন অভিমান
সমুদ্রের ঢেউ ভাঙার শব্দে জুড়ে ফেলে দুটি মন,
কিংবা তোমায় দেখবে বলে জেগে থাকে দ্বি-নয়ন।
আমি সব জানি, তুমিও তো বোঝো অনেকখানি,
তবু গল্পেরা হাঁটে, চোখে ঘুমহীন রাতের হাতছানি।

অভিমানী তারা

হয়তো ভীষণ কাছের তুমি
তাই জন্যেই অভিমান খুব,
কথার ভাঁজে অন্য ছোঁয়ায়
তোমার ভিতর দিচ্ছি ডুব।
একটা দুটো রাতের শেষে
তোমায় নিয়েই স্বপ্ন দেখি,
খুনসুটি আর ঝগড়াঝাঁটি
তোমার আমার ভাষা একই।

Monday, July 2, 2018

যুদ্ধতরী

যুদ্ধ সাজাও, শ্লোগান ওঠাও
গোলাপ হাতে সৈন্য বেশে,
তোমার আমার জন্মভূমি
আজ ধর্মযুদ্ধে সর্বনেশে।
মাঠের পাশে নগ্ন শরীর
মৃত্যু ঘন আঁধার মেঘে,
চোয়াল শক্ত ঠোঁটের কোণে
মানবতা আজ উঠুক জেগে।
কেউ কেউ বলে অমুক ধর্ম
তাই জন্যই প্রতিবাদ নাই,
ছোট্ট শিশুর বিচার চেয়ে
এখানেও সেই নোংরা লড়াই?
আমার শাঁখের সন্ধ্যারতি
তোমার আজান সুপ্ত ভোরে,
দিনের শেষে সবাই মানুষ
কীসের জন্য যুদ্ধ করে?

Sunday, July 1, 2018

মহাশূন্য

যদি শূন্য থেকে শুরু করি,
হয়তো একদিন উড়তে উড়তে মহাশূন্যে পৌঁছে যাবো,
তবু শূন্যতা তো রয়েই যাবে বুকে।
যা কিছু ভাবি আসলে পুরোটাই সত্যি কোয়ান্টামে,
আমাদের গতিশক্তি ভীষণ সীমিত,
তাই চাদর শীতে ঘুমিয়ে থাকি অন্য গ্রহের সুখে।
যদি টাইম ট্র্যাভেল করতে পারতাম,
তোমায় নিয়ে ভবিষ্যৎ নয়,
আলোকবর্ষ দূরে পৌঁছে যেতাম প্রিয়তমা।
যেখানে আমাদের ভবিষ্যৎ হেঁটে বেড়াতো
আর আমরা বয়স কমিয়ে শুধরে ফেলতাম সমস্ত ভুল
হয়তো বা নতুন সময়ে জন্মাতো পুরনো দিনের মাশুল।

Friday, June 29, 2018

সমীকরণ

সমীকরণ বলা বারণ
আমি যদি খুঁজে পাই তোমায়,
আগোছালো চুল ধুয়ে বৃষ্টির কণা গায়ে
এসো হাত ধরি মনের কোণায়।
দেখো প্রতিরাতে কারখানা কাঁদে
সময় মলাটে তুমি আমি এ অবকাশে
বিলীন বিশ্বে তারা হয়ে যাবো
জন্মান্তর ভুলে সমস্ত অতীতের আকাশে।

Sunday, June 24, 2018

যতটা চেয়েছি

আমি কখনও চাইনি তোমায় ছুঁয়ে দেখতে,
শুধু ভেবেছি এক আকাশ মাঝে গল্প জুড়ে
তোমার আঁচল খয়েরী ধুলোয় প্রেমিক সাজতে।
আমি কখনও চাইনি তোমায় গভীর রাত্রে,
শুধু চেয়েছি এক বিকেল আলোয় বৃষ্টি ভিজে
তোমার চোখের ঝাপসা আলোয় আমায় আঁকতে।

Saturday, June 23, 2018

মন প্রাচীর

হিসেব খাতায় দিন গড়ালে
কথায় ইতি তোমার আমার,
একটা বাক্য অধিক স্রোতে
বুকের ভিতর দুঃখ পাহাড়।
ক্লান্তি ভেজা দিনের শেষে
তোমায় লেখা একটা চিঠি,
অদৃশ্য তার কাগজ কলম
মন প্রাচীরে তোমায় লিখি।

Friday, June 22, 2018

মনের ইদারা - গান

তোর মনের ঠিকানা রাখা
আছে বল কোন ইদারায়,
সেখানে গল্প হবো আমি
যেটা সবাই তো হতে চায়।
আমি জানি কত সময়ের সাথে
কীভাবে মনের কথা মনে দাগ কাটে
আমার চোখের শিকড় রূপকথা ভুলে
তোকেই জড়িয়ে থাকে অগভীর ঘুমে।
তোর মনের ঠিকানা রাখা
আছে বল কোন ইদারায়,
আমিও কিনতে রাজি আছি
যদি মনের বদলে হয়।

Saturday, June 16, 2018

অস্বীকার

অনুভূতিকে তুমি কখনোই অস্বীকার করতে পারো না,
যেটাকে পারো সেটা হলো আসলে তোমার অতীত।

Friday, June 15, 2018

কথার অভাব

আমি কখনও চাইনি তোমায়
অন্য সুরের বিকেল বেলায়
আমার ভিতর তোমার ছোঁয়ায়
একটু থেকো অবহেলায়।
জানি আমি আজ ভীষণ ক্লান্ত
তোমার নিয়েই স্বপ্ন দেখত
দুইখানি চোখ রাত্রি জেগে
তোমায় নিয়েই গল্প ভেবে।
হয়তো ভীষণ বেসুরো আমি
কথার অভাব আমিও জানি
হয়তো তুমি অন্য দেশে
মাতছ নতুন জীবন রেশে।
আমিও থাকছি পুরনো ছায়ায়
প্রতিবেশী গাছ দুঃখ বাড়ায়
রোদের নাগাল সালোকসংশ্লেষ
তোমায় ছাড়া আমিও আছি বেশ।

Tuesday, June 12, 2018

মায়াবী সন্ধান

যে মায়াবী দু'চোখ তাকিয়ে আছে
আমার দিকে নয়ন মেলে,
তাদের ভাষায় ভিজতে চাই আজ
ভোর রাতের এই স্বপ্ন ভেঙে।
গভীর ঘুমের শান্ত ছায়ায়
তোমায় দেখি উঠোন জুড়ে,
আমার ভিতর কোণায় কোণায়
বাড়ছো তুমি হৃদয় ফুঁড়ে।

জেতার ইচ্ছে

এই অস্তিত্ব বড়োই একা
ভাঙা রংমশাল তবু স্বপ্ন দেখে বাঁচার,
আমি ভিজতে চাই এই শহর নবীন বেলা
তুমি ডাকপিওন, কেন সময় খোঁজো আসার?
আমি তো দিয়েছি সবকিছুই, শুধু হারতে চাইনি তখন,
তাই স্বপ্ন হলেও জেতার আশায় মাতছি সারাক্ষণ।

Friday, June 8, 2018

বৃদ্ধ রোদের ছোঁয়া

তোমার মনের শীতল ছায়ায়
বৃদ্ধ রোদের ওজন বাড়ে,
বিকেল আলোয় তোমার হাসি
আমার বুকে বসত করে।
নরম ঘাসের দেহের কোণায়
তোমার পায়ের চিহ্ন থাকে,
বৃষ্টি রাতের মেঘের ছোঁয়ায়
আমার দু'চোখ তোমায় ডাকে।

Wednesday, June 6, 2018

চশমা কাঁচ

আমি শুনেছি বৃষ্টি পড়লে
তোমার চশমায় জল জমে,
সেইটুকু সময় আমার হাতে
হাত রেখো তুমি আনমনে।
দূরত্ব মেপে রাস্তা পেরবো
তোমায় নিয়েই একসাথে,
শহর জুড়িয়ে বৃষ্টি নামুক
মন ভিজে থাক সেই রাতে।

Tuesday, June 5, 2018

ঝাপসা পথ

যদি বলি আমি ভালোবাসি তোমায়
তোমার চোখের আবেগ মায়ায়,
শেষ রাতে আমি তোমায় দেখেছি
ঘুমের ভিতর ক্লান্তির ছায়ায়।
প্রশ্নেরা তবু ভিড় করে রোজ
হয়তো ভীষণ খামখেয়ালী,
আমার জন্যে জায়গা রেখো
তোমার মনে একটুখানি।
কথা দেবো আমি তোমায় ছুঁয়ে
অনেক পাহাড় সাগর ভেঙে,
আমার মনে তোমারই স্বদেশ
ইচ্ছেরা চলুক তোমায় মেনে।
যখন তোমার চশমা কাঁচে
জমবে বাষ্প তোমায় ঘিরে,
আমার হাতে হাত রেখো তুমি
রাস্তা বানাবো তোমায় নিয়ে।

Friday, June 1, 2018

প্রবেশ নিষেধ

আমি জানি তুমি তাকাবে না এদিকে,
তোমার শহর ডুবে আছে এক অবাধ্যতায়
সেখানে আমার প্রবেশ নিষেধ,
তবু রোজ তুমি ডানা মেলো এ মনে
ঢেকে ফেলো আমার সমস্ত স্বাধীন আকাশ,
চিন্তাগুলো বন্দী হয়ে আসে তোমার ভাবনায়
মাটিতে বৃষ্টি জমে, বাড়ে মন কেমন।
আমি তো অভিমান করতে পারি না
ভীষণ ভয়ে থাকি যদি তোমার রাগ হয়?
সে মনে তবু সিঁড়ি ভাঙে না গল্প
অতীতের মেঘে ধুলো জমে,
পাতা ওলটায় না শেষ অধ্যায়ের।
জমে থাকে সময়, জমে থাকো তুমি
আমার অবচেতন এ মনের ভিতর,
শূন্যতা ভেঙে ফেলে সমস্ত আওয়াজ
সে রাতে কেউ শব্দ করে না,
তুমি ঘুমে মগ্ন তোমার বিছানা জড়িয়ে,
আমিও ক্লান্ত ভীষণ আমার মনের গভীরে।

ডাকবাক্সের ঠিকানা - গান

দুটো পথভোলা তারা বন্ধু হয় না,
কিছু গল্পেরা রোজ শব্দ পায় না।
তবু মোমবাতির এই আলোর নীচেই ভিড়
যেন গল্প ভেবে সত্যি মনের নীড়...
ডাকবাক্সগুলো পথ হারিয়ে খুঁজছে তোমায়
লিখছি যে আমি...
তাই উঠোন জুড়ে পাঁচিল ফুঁড়ে (অলস ঘুমে) সৈন্য বসাই
শব্দের মন (স্বপ্নের রাত) ভাঙ্গি...
দুটো চশমা কাঁচ কেন চোখ খোলে না,
ভাঙা মন মেজাজ কোনও মন ভাঙে না।
ভেজা অন্ধকার সেই রাতের ভিড়েই দিন
যেন পথ হারিয়ে বিকেল আলোয় ক্ষীণ...
তাই তোমার শহর বৃষ্টি জুড়ে শব্দ ভাসাই
ভাসছি যে আমি...

রাতে স্বপ্নগুলো তোমার চোখে খুঁজছে আমায়
কোথাও নেই আমি...
দুটো পথভোলা তারা বন্ধু হয় না আজ...
একা মন খারাপ আর সঙ্গী পায় না আজ...
দুটো গল্প রাত কেন জুড়তে চায় না আজ...
তাই তোমার খবর নেওয়াই আমার কাজ।
তাই তোমার বুকে আমার খোঁজে ডাক পাঠিয়ে
অল্পের দিন গুনি,
যদি তোমার মুখেও আমার নামে চারটে দুটো
শব্দ যে শুনি!
সব ভাবনারা কেন সত্যি হয়না আজ...

Wednesday, May 30, 2018

Don't Cross My Road

অনিমেশ আমার ভীষণ ভালো বন্ধু, একসাথে রোজই সন্ধ্যায় মাঠে আড্ডা দিই বেশ রাত অব্ধি। কত কথা জানে ও, ভীষণ সাহসী ছেলে... ভূতুরে কোনও ব্যাপারে অথবা হন্টেড প্লেসে যেতে হলে এক পায়ে রাজি। আর যাই হোক ও আমার মতো ভীতু নয়, অন্ধকারে নিজের ছায়া দেখেই মুখ ফেরাই... সেটা ও বেশ ভালো মতোই জানে। অনেক বিষয়ে অনেক মজা করলেও এসব নিয়ে কখনও তাই আমার সাথে মজা করে না। যাই হোক, থাক সেসব কথা...। এক গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় দক্ষিণা হাওয়ার কোলে হেলান দিয়ে আমরা মাঠের মাঝে আড্ডা দিচ্ছি। সবে এক ঘণ্টা হয়েছে।"চল, এবার ওঠা যাক", বলে অনিমেশ উঠে দাঁড়ালো মাঠের আড্ডা থেকে।
"কিন্তু এখন তো সবে সাতটা বাজে... এতো তাড়াতাড়ি... কোথায়..." জিজ্ঞেস করলাম।
কথা শেষ করার আগেই অনিমেশ বলল "একটা জায়গায় যাবো... তুই যাবি?"
এমনিতেই কোনও কাজ নেই, এখন বাড়ি যেতেও ভালো লাগছে না... বললাম "চল যাই... এমনিতেও তো কিছু কাজ নেই এখন।"
আমিও উঠে দাঁড়ালাম, অনিমেশ মাঠের পাশের রাস্তার দিকে ইশারা করে বলল "চল হাঁটা লাগা..."। আমি জিজ্ঞেস করলাম "কোথায় যাবি তো বল এই সন্ধে বেলায়, মাঠের পাশে রাস্তাটা শুনেছি ভালো না..."
অনিমেশ আবার কথা থামিয়ে বলে উঠলো "চল না, এই কাছেই..."
আমি কথা না বাড়িয়ে চললাম, একটু একটু করে এগিয়েই চলেছি... মাঠের পাশের বাঁশবাগান পেড়িয়ে অনেকটা দূরে চলে এসেছি... ওই দূরে দেখা যায় হাইরোডে আলো জ্বেলে ভীষণ বেগে বেড়িয়ে যাচ্ছে লরিগুলো আর হাওয়ার "ভোঁওওওওও...ভোঁওওওওও..." শব্দ ভেসে আসছে। অনিমেশ ওদিকে হাত দেখিয়ে বলল "চল ওদিক থেকে ঘুরে আসি..."
কেমন একটা খটকা লাগলো, ওকে বললাম "ওখানে কি আছে? হাইরোডের ধারে ওই জায়গাটা বেশ শুনশান... দোকান-পাট কিছুই নেই... ওদিকে গিয়ে..." আবার কথা থামিয়ে বলল "ধুর্‌, চল না, গেলেই দেখতে পাবি..." আমি বোবার মতো মুখ বন্ধ করে চললাম। অনেকটা কাছে এসে গেছি, এখান থেকে মাত্র কয়েক পা এগোলেই হাইরোড, একটা ফাঁকা জায়গায় গিয়ে অনিমেশ বলল "নে বস্‌ এখানে, আমার একটা কাজ আছে মিটিয়ে আসি..."
আমি বললাম, "কি কাজ রে এই নির্জন এলাকায়, যাই না!"
অনিমেশ বিরক্তির ভঙ্গিতে বলল "বস্‌ না চুপ করে, বেকার গিয়ে কি করবি... আমি আসছি একটু পরেই।"
অগত্যা বসে রইলাম একা। অমাবস্যার রাত, আকাশে চাঁদ নেই তাই আলো ক্ষীণ। স্ট্রীট লাইটের হলুদে-লাল আভায় মাথার উপর আকাশ একেবারে স্নান করে বসে আছে। আর সেই আভায় গা ঢাকা দিয়ে জেগে রাত পাহারা দিচ্ছে অজস্র তারা। পাশেই একটা ছোট তেঁতুল গাছের সমস্ত শরীর আলোয় মুড়ে দিয়েছে জোনাকির দল। দক্ষিণা হাওয়া যখন বইছে কেমন নড়ে চড়ে উঠছে এই জোনাকির দল দিয়ে আবার কেমন এলোমেলো হয়ে সেই গাছের পাতায় গিয়ে বসছে। এই হাওয়ায় বেশ আলস্য জাগছে শরীরে, মনে হচ্ছে এই ফাঁকা মাঠেই শুয়ে থাকি আকাশের দিকে চোখ রেখে, যদি একটা দুটো তারা খসে পরে তো কিছু ইচ্ছে পূরণ হতে পারে। বেশ খানিকক্ষণ কেটে গেলো, অনিমেশ আর আসে না। কি জানি কি কাজে আটকে পড়েছে, আমার বেশ ভালোই লাগলে। কেমন একটা নস্টালজিয়া ভাব জাগছে মনের ভিতর। কত পুরনো কথা মনে পরে যাচ্ছে, কলেজ লাইফের না হওয়া প্রেম, প্রাক্তন প্রেমিকার অভিমান, আরও কত সব কথা...। এই নস্টালজিয়া থেকেই কখনও বা একটা ফ্রিকশানও সৃষ্টি হচ্ছে মনের ভিতর। মনে হচ্ছে ওই দূরে আকাশের কোলে তারাদের ভিতরেও যেন অন্য আরেক নক্ষত্রজগৎ আছে। সেখানে আমারই মতো কোনও মানুষ হয়তো বসে আছে আর একভাবে তাকিয়ে আমার মনের গল্পগুলো সব পড়ে ফেলছে। অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করছে কোনও একদিন সেই ভিনগ্রহী মানুষের সাথে দেখা করার। হয়তো বা সেও আমারই মতো ভাবছে ভিন গ্রহে বসে, হয়তো বা সে জানেই না আমি এখানে তার অপেক্ষা করছি, এরকম কত চিন্তা মাথায় ঘুরছে। এক অন্যরকম অনুভূতি, যার কোনও লজিক নেই, শুধু আবেগ আছে। মনে হচ্ছে যদি গান লিখতে পারতাম, এই রাতেই হয়তো দু-তিনটে গান আর গোটা চারেক কবিতা নামিয়ে ফেলতাম, কিন্তু আমি তো সেসব কিছুই পারি না। কেমন এক অদৃশ্য নেশায় মগ্ন হয়ে আছি। হঠাৎ গায়ে একটা ঠেলা দিয়ে "কিরে! বাড়ি যাবি না? রাত হল তো!"
"কে? ওহ! অনিমেশ তুই..." চমকে উঠলাম। "হ্যাঁ যাবো তো, তুই-ই তো কোথায় চলে গেলি এক্ষুনি আসছি বলে।" বলে ঘড়ির দিকে তাকালাম। "হ্যাঁ! এর মধ্যে সাড়ে ন'টা বেজে গেলো... চল চল তাড়াতাড়ি চল..."
আমি একাই বকে গেলাম, অনিমেশ চুপচাপ হাঁ করে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে। আলস্য ভাঙিয়ে উঠতে একটু আস্তেই উঠছি, এবার অনিমেশ মুখ খুললো "তাড়াতাড়ি চল, অনেক কাজ..." বলেই আমাকে হাতটা ধরে তুলল। যে পথে এসেছি সেই পথেই ফিরবো, হাঁটা শুরু করার আগে অনিমেশ আমাকে একবার থামালো। অদূরে হাইরোডের দিকে হাত দেখিয়ে বলল "ওই যে দেখছিস ওখানে রেলিংটা ভাঙা মতো, কোনোদিন সন্ধ্যাবেলা ওখানে রাস্তা ক্রস করবি না...।" আমি জিজ্ঞেস করতে যাবো "হঠাৎ এরকম অদ্ভুত কথা বলছিস কেন রে..."। অনিমেশ রেগে গিয়ে বলল "যেটা বলছি সেটা শোন, মেলা কথা বাড়াস না... গতকাল আমাকে এক বন্ধু বলেছিল এই কথাটা। তোর ভালো চাই তাই তোকেও বললাম, কেন কি বৃত্তান্ত অতো জানি না ভাই..."। ঠিক হ্যায়, আমি এমনিতেই ভীতু মানুষ, কি বলতে কি গল্প শুনিয়ে দেবে এখুনি তারপর আবার ভয়ে বাঁশবাগানের পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবো না, একেই অমাবস্যার রাত। হাঁটা লাগালাম আমি আর অনিমেশ। অবশেষে আবার মাঠে গিয়ে পৌঁছলাম। আমার আর অনিমেশের বাড়ি দুই প্রান্তে, অতএব এবার রাস্তা বদল। অনিমেশ অন্যদিকে চলে গেলো, আমি আমার বাড়ির রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলাম। যাওয়ার আগে বলে গেলো, "যেটা বললাম মনে থাকে যেন... আর হ্যাঁ, কাল তো তোর চাকরির ইন্টার্ভিউ আছে। অল দ্য বেষ্ট।"। "থ্যাঙ্কস" বলে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। বাড়ি ফিরে তাড়াতাড়ি ডিনার সেরে শুয়ে পড়লাম। কেমন একটা অস্বস্তি কাজ করছে মনের ভিতর, কেন জানি না। পরেরদিন সকালে উঠে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম চাকরির পরীক্ষা দিতে। যাওয়ার পথে ষ্টেশন থেকে একটা খবরের কাগজ কিনে ব্যাগে ভরে নিলাম। নির্দিষ্ট সেন্টারে পৌঁছে মনে হল ইন্টার্ভিউতে তো আবার মাঝে মাঝে কারেন্ট আফ্যেয়ার নিয়ে প্রশ্ন করে তাই কাগজটা একটু দেখে নিই এবার। কোনোক্রমে প্রথম পাতাটা খুলতে যাবো, আমার ডাক এলো ভিতর থেকে। কাগজটা ব্যাগে ঢুকিয়ে ভিতরে গেলাম। ইন্তারভিউয়ার প্রশ্ন করলেন, আমিও ঝটপট উত্তর দিয়ে বেশ ভালো মতো ক্র্যাক করলাম ইন্টার্ভিউটা। ভাগ্যক্রমে কারেন্ট আফ্যেয়ার নিয়ে সেভাবে কিছু ধরে নি, ওই কদিন আগে একটা রাজনৈতিক ঝামেলার উপর প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে কয়েকটা প্রশ্ন করেছিলো মাত্র। বড্ড ক্লান্ত লাগছে শরীরটা, পাশেই একটা চায়ের দোকানে গিয়ে চা খাচ্ছি। পাশেই টেবিলের উপর রাখা বাংলা-ইংরেজি খবরের কাগজ, চায়ের কাপটা নামিয়ে রেখে ইংরেজি কাগজটা হাতে নিতেই একটা ধাক্কা। প্রথম পাতায় বড়ো বড়ো অক্ষরে ছাপানো অনিমেশের মৃত্যুর খবর। স্থানঃ- কাল রাতের সেই হাইরোডের বুকে রেলিং ভাঙা জায়গাটা, সময়ঃ- গতকাল রাত সাড়ে আটটার আসেপাশে। কেমন যেন শিউড়ে উঠলাম, এই প্রচণ্ড গরমেও একটা ঠাণ্ডা স্রোত। সাব-হেডিং-এ মাঝারি হরফে লেখা "Don't Cross my road".

Tuesday, May 29, 2018

ঋণ

আমি কি কিছু দিতে পারি তোমায়?
একটা ভাঙা সন্ধ্যা পাখিদের ডানায়
যেখানে রোদ্দুর খেলে ধুলোর কণায়
আর স্বপ্নেরা জমে চোখের কোণায়।

Monday, May 28, 2018

তোমার খোঁজে

হে নূতন তুমি প্রবীণ ছায়ায়
বাস করো আজই এ দরবেশে,
যেখানে তোমার নীরব মায়ায়
জ্বলে সন্ধ্যার আলো এ আঁধার দেশে।
সেখানে আমার মনের আলাপ
হাতে একতারা গানে প্রানের নয়ন,
প্রেমের স্পর্শে ভোরে মুছিল গোলাপ
আবেগ চিঠি এ মনে শয্যায় শয়ন।
জানি তুমি আজ ধরা দেবে না
সে কবিতার খাতা তোমার নামে,
এ বুকে তবুও ভালোবাসা জাগে
সুযোগে সোহাগে বেড়ে ওঠে গানে।
বিনম্র তোমার চোখের আবেশ
রাখিব এ মনের নিশীথ ছোঁয়ায়,
যেখানে আমি বাস করি একা
কালো আকাশের বুকে মেঘেদের ধোঁয়ায়।

Saturday, May 26, 2018

চলো পালিয়ে যাই - গান

একটা গান আছে তুমি গাইবে কি?
যতটা বলার বাকি তুমি শুনবে কি?
তোমাকে হঠাৎ চিঠি তুমি পড়বে কি?
শহরে মাতাল বৃষ্টি, বলো ভিজবে কি?

অচেনা নতুন শপথ চলো পালিয়ে যাই,
সেখানে তোমার আমার চলো ঘর সাজাই।
যেখানে ভাঙবে ভুল, পুরনো রোদের মাশুল
চলো সব ভুল ভেঙে আজ এগিয়ে যাই!

একটা বিকেল আঁধার ওড়ে জোনাকি,
সেখানে প্রেমের আলোয় ক্লান্ত ঝিঝি,
বিকেলে লালের আভায় প্রেম গুনবে কি?
হারানো অনেক স্বপ্ন, বলো দেখবে কি?

সময়ে সবাই হারি, কোনও পথ তো নাই,
এভাবে জেতার খেলায় মনে রঙ ওড়াই।
যেখানে অল্প খুব, তবুও আঁধার নামুক,
চলো জিতবো ভেবে আজ হাত মেলাই!

কবিতার লাশ

মাটির নীচে কবিতার লাশ খনির গর্ভে ভাঙে বিশ্বাস,
শ্রমিক শুধুই শব্দ খোঁড়ে, অনুভূতিরা এভাবেই মরে।
বিকেল ভরা শব্দ তালাশ আগুন জ্বালায় রক্ত পলাশ,
মৃত্যু হিসেব স্বাধীন ঝরে, আলোর জন্ম নতুন ভোরে।

Wednesday, May 23, 2018

নীরব প্রতিক্ষা

একজন নীরবে বাড়ে মনের গোপনে,
আঁচর কাটে কিছু অল্পবয়সী ঠিকানা
সে পথে প্রতিদিন পাল্টায় ধুলোর রঙ,
কি হবে মিথ্যে বলে, আমিও তো চাই।
বিরক্তির ভরবেগ বাড়ে অহেতুক আলাপে,
এড়িয়ে যাই অন্যায় এই আবদার এই মুহূর্ত,
সন্ধ্যার হাওয়া যদি তার নাম ধরে ডাকে,
ক্ষতি কি? আমি রাজি এই প্রহর গুনতে।
সিঁড়ি ভেঙে উঠে যাক তবে অভিমান
একা ছাদ বসে থাকে তাদের অপেক্ষায়,
কখন আসবে তুমি এ নীরব রাতের বুকে
আমিও জোনাকি সাজাই তোমার প্রতিক্ষায়।

Saturday, May 19, 2018

সন্ধ্যার মন

সন্ধ্যার ছাদে দক্ষিণা হাওয়ায় ক্লান্তিরা যায় মিশে,
কলম কাগজ সন্ধি বানায় কবিতাকে ভালোবেসে।
সেখানে তোমার অবাধ প্রবেশ সৈন্যরা পথ আঁকে,
অনুভূতি জমে মনের কোণায় তারারাও রাত মাপে।
উড়ো চিঠি জমে তোমার নামে ঠিকানা গোপন করে,
এভাবে কিছুটা মিথ্যা অবকাশে কবিতারা খসে পরে।
আমি জানি এসব নিছকই ভুলের মনমরা কিছু কথা,
শিরায় শিরায় শব্দেরা সাজে, ধমনীতে প্রেমের ব্যথা।

Friday, May 18, 2018

মন ঠিকানা

যদি কবিতারা কথা বলতে জানতো
তোমাকেই আটকাতো,
যদি প্রতিদিন ওরা আবেগে ভাসতো
তোমাকেই দোষ দিত।
তুমি জন্ম দিলে ওদের
আর শব্দ দিলে না,
কেন মন্ত্র দিলে ওদের
ভুল দিলে ঠিকানা,
তোমার মনের।

অকাল বৃষ্টি

ধুয়ে ফেলি যতো জমা কথা সব
অকালে বৃষ্টি তোকেই দিলাম,
নিলে ভালো এই মনের খবর
নইলে এ মন ফিরিয়ে নিলাম।
মেঘেদের বাড়ি ফুটপাথ জুড়ে
রোদ্দুর খোঁজে মুখে তোর নাম,
অকাল বৃষ্টির একলা ছাতায়
আশ্রয় খোঁজে ভেজা অভিমান।

Thursday, May 17, 2018

অভিমানী দর্পণ

নিঃসঙ্গতা বাড়ে, এখানে আমি নিতান্তই একা,
যেখানে আমায় সময় আমারই শব্দেতে আঁকা,
তুমি বোঝো না এই বোধন, এই নৈশব্দর আঁধার
আমি ফিরে যাই স্রোতে যেখানে স্মৃতির পাহাড়।
কখনও কি তুমি ছুঁয়ে দেখেছো এ মনের ব্যর্থতা,
যেখানে তুমিই বক্তা আর এই মনগুলো শ্রোতা।
নিজেকে প্রশ্ন ছুঁড়ো নিশীথে গোপনে আয়নায়,
কতটা সঠিক তুমি তোমার অভিমানী বায়নায়।

Tuesday, May 15, 2018

প্রেমিকার ক্যানভাস

তোকে ভালোবেসে অবহেলা যাকে
করেছি সেও তো ভালোবাসে,
আমিও জ্বলবো চোখের তারায়
সেই প্রেমিকার-ই ক‍্যানভাসে।

Saturday, May 12, 2018

সনাতনী চোখ

আমার শহরে ভালোবাসা নেই
বেঁচে আছে এক প্রকাণ্ড গাছ,
যার ছায়াতে অনুভূতি খোঁজে
অন্ধ মনের স্মৃতির কোলাজ।
বিকেল নামে হলুদ আলোয়
ফিকে হয়ে যায় তিলোত্তমা,
পাখির ডানায় কলরব ভাসে
আকাশ জুড়ে ভয়ের কণা।
আমার শহর অশ্লীল তাই
তরুন-তরুণী মার খেয়ে মরে,
দিনের আলোয় বাসের ভিতর
এ কোন সমাজ নিঃশ্বাস ছাড়ে?
সেখানে কোনও প্রতিবাদী নেই
সবাই ব্যস্ত নিজেদের কাজে,
এরাই আবার তর্জনী তোলে
প্রেমিকা ঘুমোলে প্রেমিকের কাঁধে।

মনের ভিতরে

এই রাতে কেবল বৃষ্টি পোশাকে
বাসিবো ভালো গোপনে তাহাকে,
যেই জন আমার মনের গভীরে
বাস করে একা অলীক শরীরে।
এই প্রেমে কোনও বিরক্তি নাই
আমি শুধু তাহাকে দু'চোখে হারাই,
তাহার চোখের হাসির পলকে
আমি বেঁচে থাকি বিচ্ছেদ যোগে।
মুখোমুখি হই কত কাছাকাছি
মনে ধরি তাহার আগোছালো হাসি,
একতরফা রোজ ভালোবাসা জমে
তাহাকে এঁকে রাখি মনের কলমে।

Friday, May 11, 2018

একলা শহর - গান

একলা শহর, একটা বছর
রাস্তা মোছে জটিল আঁচর,
কোথায় আমার ঘরের কোণে
একটা চিঠি একলা মনে
ভাঙছে বসে নবীন পাথর,
জ্বরের শীতে একলা চাদর
তোমার হাতের অপেক্ষাতে
কাঁদছে ভীষণ গভীর রাতে।

(Not the full version)

Thursday, May 10, 2018

অচেনার শহরে ডাকে

শহর ভেজা অহংকারে
মেঘের পালক আকাশ ছুঁয়ে,
কাঁচের স্মৃতির রেলিং বেয়ে
বৃষ্টি নামুক দুচোখ ধুয়ে।
এই শহরেই আসবো ফিরে
একলা রাতের গল্প নিয়ে,
মনখারাপের সপ্ত সুরে
গান সাজাবো তোমায় ঘিরে।

Monday, May 7, 2018

সময়ের এক্সিস

কীভাবে সময় পালিয়ে যায় রোজ,
যদি না X-এক্সিসে তাকে মুক্ত করি?
আমার সমস্ত প্রয়োজন Y-তে বন্দী,
সীমারেখা মেনে কাগজে গড়াগড়ি।
এই যে frequency বড্ড ছটফটে,
প্রত্যেক ঢেউয়ে অবাধ্যতার সারি,
যদি থমকে যায় সময়ের দৌরাত্ম্য,
তুমি কীভাবে ফিরে আসবে বাড়ি?
প্রত্যেক স্টেপে সময়ের অলীক ছোঁয়া,
বড্ড ভাবি, হয়তো ভীষণ আনকোরা,
যদি বাঁধা যেত সময় সুতোর ফাঁসিতে
তবে থেমে যেত চোখ তোমার হাসিতে।

Friday, May 4, 2018

কেন এতো গল্প লিখি রাতে - গান

শূন্যস্থানে বালি ওড়ে ওড়ে
এইখান থেকেই কাহিনীরা ঘোরে,
শব্দের দোষ থাকে আমি চলে যাই,
সন্ধ্যের আলো তোকে খুঁজে পাই
গলিমুখে অন্য প্রেমে ভেসে
তুই প্রেমিকের ঠোঁটে মুখে থাক।
আমি আছি আজও কাছাকাছি
নোনাজল সাগর মুগ্ধ হয়ে বাঁচি,
আলোছায়া মন ভাঙে রাতে হেঁটে যায়,
ঘুম চোখে পথিক পথে পথ হারায়,
চেনা পথে অন্য কোনও বেশে
এই অভিমানে রাত মুছে যাক।
আমি কেন এতো ঘুম সাজাই রাতে,
আমি কেন এতো গল্প লিখি হাতে!
তুই সব ভুলে যাস কীসের অজুহাতে,
আমি জেগে আছি আয় তোর আয়নাতে।


(Not the full version)

Wednesday, May 2, 2018

অমর কবিতা

কবিতারা অমর, শব্দের বৃষ্টিতে সুখী,
মেঘের পশমে রাতে প্রেম মুখোমুখি।

Tuesday, May 1, 2018

নদীর বুকে

কিছুটা সময় নদীর বুকে একলা মনে থাকি
সময় পেলেই ক্লান্ত হাতে তোরই ছবি আঁকি,
নৌকা পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকে অন্য দিকে ঘুরে
জলের বিন্দু দুহাত ছুঁয়ে ভেসে যায় আরও দূরে।
আকাশ জুড়ে আলোর মায়া আবেগ বাড়ায় রোজ
আমার শহরে আলো চলাচল তোরই মনের খোঁজ,
শান্ত হাওয়ায় মুখ ফিরিয়ে বসে থাকি আমি রাতে
কথার শিকল উঠে যায় বেয়ে সময়ের অজুহাতে।

Sunday, April 29, 2018

তারার গ্রহণ

ভাঙছে শহর প্রেমের পাতায়
বিকেল ধুলোর উল্কাপাতে,
বাঁধছে গ্রহণ তারায় তারায়
সুযোগ পেলে গভীর রাতে।
কথার নালিশ গাল বেয়ে যায়
আঙুল ছুঁয়ে নরম হাতে,
সেলফোনে চোখ নীরবে তাকায়
বুকের ভিতর যন্ত্রণাতে।
এভাবে নতুন সকাল আসে
একটা দুটো কল্পনাতে,
আগের রাতের স্বপ্ন ভাসে
চোখের পাতার আলপনাতে।
কথার আবেগ নরম ঘাসে
নতুন প্রেমের সুত্রপাতে,
মেঘের কোণায় সর্বনাশে
মেলায় স্মৃতি বজ্রাঘাতে।

Saturday, April 28, 2018

মন্দ-ভালো

বাড়ছি তোর এই বন্দী আলোয়
শিকড় জড়িয়ে মন্দ ভালোয়,
পথের বিকেল বড্ড মন খারাপ।
আকাশ কালোয় সন্ধ্যা শাঁখে
জড়িয়ে গিয়েছি অভিশাপে,
আমার বুকে তোরই মনের ছাপ।
যদি একটা দিন গল্প লিখি
চিঠির ভাঁজে তোকে দেখি,
দিনের প্রথম আলোয় সুপ্রভাত।
বিকেল ছুঁয়ে রাত্রি নামে
রাতের সন্ধ্যাতারা জানে,
আমার ভীষণ মনখারাপের ধাত।

সুপ্ত প্রেম

তোকে খুঁজিনি, হয়তো খুঁজতে চাইনি,
জামা ভিজে গেছে ব্যস্ততায়,
আমার কথায় একঘেয়ে বিরক্তিমুখ তাই
থাকতে চাই শুধু অপেক্ষায়।
ভালোলাগা চোখে ভালোবাসা মিশে
টিফিন টাইম এক কোণায়,
খুঁজে ফেলি তোকে, বলে ফেলি সব
একটা আবেগ যন্ত্রণায়।
কত রাত জেগে কত কথা তোকে
বলেছি ভেবে যতনে,
যেভাবে শামুক ধীর নিঃশ্বাসে
পথ হেঁটে চলে স্বপনে।
রক্তচাপ বাড়ে বিশাল সংখ্যায়
মনকে বোঝাই গোপনে,
ভালোবাসা কখনও ক্লান্ত হয়না
প্রেমের বৃক্ষ রোপণে।

Sunday, April 22, 2018

Enemy of star

যদিও সবটাই আপেক্ষিক
পথিকও এগোতে জানে না
আর পথও পিছোতে পারে না,
দোটানায় আটকে থাকে পৃথিবী।
মায়া বাড়ে, ধুলো জমে পথে
আমি বৃষ্টি ভিজে হেঁটে বেড়াই,
মেঘের আড়ালে শুষ্কতা লুকিয়ে
আর ছায়াপথ জ্যোতিষ্কের এনিমি।

Friday, April 20, 2018

সুতোয় সংঘাত

বলেছি তোকে মনের কথাই
ভিজেছি রাতে প্রেমে অযথাই,
তোর জন্যই বাড়িয়ে রেখেছি হাত।
জানি ডুবে গেছি এক চোখ জলে
কীভাবে তোকে বেঁধেছি আনমনে,
একটা সুতোয় প্রান্ত দুইয়ের সংঘাত।
তবুও আমি লেগে আছি নীলে
মনের কোণায় কিংবা বাতিলে,
আমার তোকে শব্দ ছোঁড়ার ধাত।
কোথায় গেলে পাবো বল তোকে
পাথর গলাবো ভেজা দুই চোখে,
এমনি করেই কাটবে অচেনা রাত।

Thursday, April 19, 2018

কল্প-প্রেম

আমার ইচ্ছে করে একটা ফাঁকা বন্দর
যেখানে তোর মায়ায় সমস্ত রাত ঘুমিয়ে,
একটিবার এসে দাঁড়াবি আমার পাশে?
শুধু বলতে চাই ভালোবাসি আর কিচ্ছু না,
তোর আঙুল ছুঁয়ে ফিরে আসবো আমি
ছায়াপথে খসে যাওয়া তারাদের অনুগামী।
সার্চলাইট জ্বেলে জাহাজ আসবে নেমে
তুই উঠে যাবি জলের বুকে ভাসার জন্য,
কিছুটা আলো রেখে যাস নদীর কিনারে
সে আলোয় স্নান করে আমার ফিরে আসা,
আমি প্রত্যেক রাতে দাঁড়াবো খালি পায়ে
যেখানে স্বপ্নেরা বাঁচে ভেজা কবিতার গায়ে।

Tuesday, April 17, 2018

প্রেমের ঘানি

কোথাও যেন আমার শহর বৃষ্টি পায়ে পায়ে
ছাতার নীচে প্রেম বুনে দেয় অচেনা দুটি গায়ে,
রাত বেড়ে রোজ নতুন রঙে গল্পের হাতছানি
শহর ভিজুক বৃষ্টি ছাদে, ঘুরছে প্রেমের ঘানি।
এভাবেই আমার প্রেম নিবেদন মানুষের ভিড় ঠেলে
তোর কথাতেই ডুবছি ভাসছি আশার আগুন জ্বেলে,
ভাবছি আমিও ফিরে যাবো রাতে অচেনা শহর ছেড়ে
ভালোবাসা মাখা ভিজে জামা গায়ে শ্যাওলা উঠবে বেড়ে।

Monday, April 16, 2018

অপেক্ষার কবর

আমার ঘরে রাত বাড়ছে নিঃশব্দে
ফুলের তোড়া হাতে তোর বারান্দায় আমি,
অপেক্ষাতে আমার অভ্যাস লুকিয়ে
তোর প্রতিটি কথা আমার কাছে ভীষণ দামী।
প্রেম বেড়ে যায় নীরবে নিশীথে
যেখানে গল্পের গভীরে বাড়ে মায়ার সাগর,
তোকে চিঠি লিখি মনের গভীরে
আমার প্রেমের সমাধি হারিয়েছে নিজের কবর।
এভাবে অনেক লেখাই জমে
কিছুটা সাগর ছুঁয়ে কেউ মহাকাশে গিয়ে পড়ে,
যেখানে আমার অস্তিত্ব ক্ষীণ
সেখানেই আমি চোখ মুছে রোজ ফিরে আসি ঘরে।
কীভাবে বলবো তোর কানেতে
কোথায় আমার ইচ্ছেগুলো উড়ছে আকাশ মেঘে,
জানিনা কবে ফিরে যাবো শেষে
বহু আছিলায় শুধুমাত্র একটিবার তোকে দেখে।

Saturday, April 14, 2018

মনের খোঁজ

প্রতি রাতে তোকে শব্দ ছুঁড়ি
কাগজ কলম খাতায়,
কীভাবে জাহাজ বন্দর ছুঁয়ে
মিশে থাকে কবিতায়।
একটাই কথা একশো ভাবে
বলতে চাইছি রোজ,
তোর মনেতেই সকাল দুপুর
একটু আমার খোঁজ।
আমার পাঠানো কাগজের প্লেন
মুখ থুবড়িয়ে পড়ে,
তোর উঠোনে পাহারা ভীষণ
ঢুকতে পারে না ঘরে।
তুই কি আমায় পড়তে পারিস
আমার চোখের কোণে?
আমি তো তোকে ভালোবাসি খুব
প্রতিদিন আনমনে।

ধ্বংসস্তূপ

যে কুঁড়িটা ফুটতে পারেনি
বনফুল নাম নিয়ে
সেখানে তোমরা আগুন জ্বেলেছ
ধর্মের গান গেয়ে।
এটাই কি তার ভুল ছিল শুধু
মন্দির পাশে জন্ম?
কই, তোমরা তো কেউ হিসেব চাওনা
কত পেট পেল অন্ন!
অবশেষে কিনা মুছে গেলো সেই
ফুলের মুখে হাসি,
তোমরা এভাবে বিষ মেশালে
পরাগে রাশি রাশি।
তবুও সে ফুল মরতে চায়নি
মুছরে গিয়েছিলো গায়ে,
অবশেষে তোমরা মারলে তাকে
কঠিন ইটের ঘায়ে।
আর কতদিন মারবে এভাবে
ধর্মের নাম নিয়ে?
তোমার ঈশ্বর লুকিয়ে কাঁদছে
আসিফাকে বুকে নিয়ে।
ওই দেখো আকাশ আগুন জ্বালায়
পুড়ছে রঙের বর্ম,
আমার কাছে সব থেকে প্রিয়
বঞ্চিত মানবধর্ম।

Friday, April 13, 2018

ব্যস্ত সময়

শিকল বিদ্ধ সময় কাঁটায়
ঘড়ির দুহাত অন্য পাতায়
লিখছে প্রেম আজ ব্যস্ত হাতে
ভাবছি তোকেই গভীর রাতে।
কথার ভাঁজে শব্দ বাড়ে
দু'চোখে তোর স্বপ্ন ঝরে
এইভাবে রোজ দেখছি তোকে
সুযোগ পেলেই আড়াল চোখে।

Thursday, April 12, 2018

সৃষ্টির বৃষ্টি

চলনা যাই বৃষ্টি পায়ে
ভিজবো দুজন মেঘের গায়ে,
মাটির বুকে দুঃখ জমবে
শহর হাঁটবে খালি পায়ে।
ঠোঁট ছোঁয়াই কফির কাপে
জমবে আলাপ ভীষণ শোকে,
কাঁচের দেওয়াল বাষ্প জমবে
মনের বৃষ্টি গোপন চোখে।
এখনও রাত্রি ভাঙবে ঘুম
ননস্টপ স্বপ্নের খোঁজ করে,
শহরে জমবে প্রেম নতুন
সাজানো কক্ষের ঘুম ঘরে।

Wednesday, April 11, 2018

কথার বিষম

বলবো ভাবি অনেক কিছুই
এলোমেলো সব মনের collage,
কথার স্রোতে জড়িয়ে গেছি
খেয়াল রাখাই আমার রেওয়াজ।
একটা বাক্যই অনেক বেশে
মাথার ভিতর ঘুরছে বেগে,
অল্পক্ষনের আলাপ পাতায়
কখনো প্লিজ যাস না রেগে।
দুঃখিত আমি এখনও ভীষণ
কথার সাজেই কথায় বিষম,
হঠাৎ দেখায় পলক পড়ে,
মনের ভিতরে বসন্ত ঝড়ে।

Saturday, April 7, 2018

পিছুটান

কালের সন্ধ্যায় ভাঙছে সিঁড়ি
বয়স গুনছে অভিমান,
তোমার আমার হঠাৎ দেখা
মুখ ফিরিয়ে পিছুর টান।
আকাশ মেঘের নীরব ছোঁয়া
বৃষ্টি ভেজা তোমার গান,
ঠোঁটের কোণে মিথ্যে শপথ
কেউ রাখেনি কথার দাম।

Friday, April 6, 2018

স্মৃতির অতীত

বছর ঘুরে বসন্ত আসে
অনেক কথাই চাপা পড়ে যায়,
নতুন সকাল আলোয় ভাসে
পুরনো স্মৃতি পিছু ফিরে চায়।
এখনও কি তুমি বিকেলগুলোয়
সৈন্য সাজাও নতুন রাজায়?
তোমার ভিতর মানুষগুলোকে
হৃদয়ে রেখো বাঁচার আশায়।

Monday, April 2, 2018

চাওয়া পাওয়ার গল্প

তুমি কি চেয়েছ, আমি কি দিইনি,
রুমাল ভেজায় স্বপ্ন,
তোমার চোখের কালোয় আকাশ
জ্যোৎস্না আলোয় মগ্ন।
আমি কি চেয়েছি তুমি কি দাওনি
সেই নিয়ে কথা নেই,
আমি তো শুধুই চেয়েছি তোমায়
আঁধারের কালোতেই।

Unedited Version :
তুমি কি চেয়েছ, আমি কি দিইনি,
রুমাল ভেজায় স্বপ্ন,
তোমার চোখের কালোয় আঁকা
আরেকটা প্রেম ধন্য।
আমি কি চেয়েছি তুমি কি দাওনি
সেই নিয়ে কথা নেই,
আমি তো শুধুই চেয়েছি তোমায়
আঁধারের কালোতেই।

Saturday, March 31, 2018

আবার ছাঁটাই

অন্ধ প্রেমিক হেঁটে যায়
কিছুটা অবাধ্যতায়,
যদি কোনোদিন নেমে আসে
চিঠির পাতায়...
এখনও ভাবনা ভেবে যাই
শহরে রাত কাটাই,
কিছুদিন বাকি আর
আবার ছাঁটাই...
এভাবেই চলে যায় যত স্মৃতি মোছা দিন
শহরে প্রেমের খনি, তুমিও স্বাধীন,
বৃষ্টি নামতে পারে যেকোনো আকাশে,
আবার নতুন কিছু, বাকিটা ফ্যাকাসে।

Friday, March 30, 2018

আগুনের পরশমণি

সন্ধ্যা নেমে গেছে, লেকের ধারে গিয়ে অনেকটা সময় আমরা চারজন একসাথে কাটালাম। ওদিকে তাঁবু খাটানোই আছে, পাহারা দেওয়ার কেউ নেই অতএব তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। যদিও হোটেল মালিক বলেছেন অসুবিধা নেই, তবুও আমাদের মন সায় দেয় না, তাড়াতাড়ি ফিরে আসি। ইচ্ছে আছে সারারাত না হলেও মাঝরাত পর্যন্ত আগুন করে আড্ডা দেবো একসাথে। তারপর দু'জন তাঁবুতে থেকে যাবে আর বাকি দু'জন হোটেল রুমে ফিরে যাবে। কিন্তু আগুন যে করবো, কাঠ কই? আশপাশ ঘুরে জানলাম কেউ এখানে কাঠ বিক্রি করেন না, তারা সমস্ত কাঠ বাজারে বিক্রি করেন। যাই হোক, কি আর করা যাবে, না হয় গাছের পাতা জ্বালিয়েই আগুন জ্বালতে হবে, কিন্তু এতে আর কতক্ষণ আগুন জ্বলবে গ্যারান্টি নেই। কারণ শুকনো পাতা নিমেশে ছাই হয়ে যায়, ধোঁয়া হয়ে আগুনের চোখ রাঙানি লাল হয় কিন্তু তেজ বাড়ে না। তবুও শেষবার চেষ্টা করে দেখা যাক কাঠ পাওয়া যায় কিনা, ওই তো অন্ধকারে মোড়ের মাথায় দু'জন স্থানীয় ভদ্রমহিলা গল্প করছেন, ওদের কাছে গিয়ে...

- দিদি, এখানে কাঠ কোথায় পাওয়া যাবে একটু বলতে পারেন?
- (প্রত্যাশিত ভাবেই উনি প্রশ্ন ছুঁড়লেন আঞ্চলিক ভাষায়, পূর্ণ বাক্য না বুঝলেও যেটুকু বুঝলাম এটাই দাঁড়ায়) কাঠ কিই কইরবে এই রাইত্রে? এইখনে তো পাইবে না, ওইদিক যাও, আদিবাসীরা হইতো দিতে পারে।
- কিছু কাঠ পাওয়া গেলে খুব ভালো হতো, একটু আগুন জ্বালাতাম।
- আগুন জ্বেলে চিইকেইন কইরবে নাকি?
[প্রসঙ্গত বলে রাখি, ওখানে 'মুরগি'র বদলে 'চিকেন' শব্দটি বেশী ব্যবহৃত হয়ে থাকে, হয়তো পর্যটন শিল্পের কাঁচা দাগ]
- আসলে আমরা ওখানে তাঁবু করেছি রাতে থাকবো, তাই একটু আগুন জ্বেলে বসবো, রান্নাবান্না করবো না।
- (অপর ভদ্রমহিলাটি ইনাকে বিদায় জানিয়ে রাস্তা ধরে অন্য দিকে হেঁটে চলে গেলেন) আইসো তাইলে আমার সাথ...

আমি গেলাম উনার পিছুপিছু। গ্রামের একদম শুরুতেই বাঁদিকের একটি মাটির বাড়িতে উনি নিয়ে গেলেন। বিজলী এখনও প্রবেশ করেনি, অন্ধকার উঠোনে লম্ফ জ্বালিয়ে খাটিয়ার উপর একজন তুলনামূলক বয়স্ক মহিলা শুয়ে ছিলেন। আমাকে নিয়ে গিয়ে ওই ভদ্রমহিলা তেনার কাছে আঞ্চলিক ভাষায় কিছু একটা বললেন এবং আমাকে ওখানে দাঁড়াতে বলে উনারা দুজনেই ভিতরে চলে গেলেন। যা বুঝলাম আমার কিছু কাঠ লাগবে এরকমই কিছু একটা বললেন। কিছুক্ষণ পড়ে উনি ফিরে এলেন সঙ্গে এক গুচ্ছ কাঠ বেঁধে নিয়ে। আমি উনার থেকে সেই কাঠের গুচ্ছ হাতে নিয়ে উনাকে জিজ্ঞেস করি "এগুলোর দাম কত?", উনি কিছু একটা আঞ্চলিক ভাষায় বললেন, প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি তবে দ্বিতীয় বার বলার পর যা বুঝলাম সেটার মানে দাঁড়ায় যে "নিয়ে যাও, কিছু লাগবে না।" এতক্ষণে আমার এক বন্ধুও ওখানে এসে উপস্থিত হয়েছে, দু'জনেই মনস্থির করেছি এই কাঠের দাম দিয়ে তবেই আমরা যাবো। উনি বারবারই দাম নিতে অস্বীকার করতে থাকেন, শেষমেশ বলেন "দাউ তুমরা যা ভাইল বুঝো" এখানেও আমার আপত্তি, কখনও জঙ্গলে গিয়ে এভাবে কাঠ কুড়িয়ে সমান মাপ করে কেটে জোগাড় করিনি, অতএব তাদের পরিশ্রমের দামটা কল্পনায় হিসেব করাটা খুবই কঠিন আমার কাছে। কি জানি, একটা দাম দিয়ে দেবো সেটা হয়তো উনাদের কাছে কম মনে হতে পারে। আসলে অনেক জায়গায় দেখেছি কীভাবে আদিবাসী শ্রেণীর মানুষেরা জঙ্গলের কাঠ কুড়িয়ে সেগুলোকে একসাথে বেঁধে মাথায় নিয়ে খালি পায়ে চড়াই উতরাই পথ পেড়িয়ে পাহাড়ের মাথা থেকে নীচে নেমে আসেন শুধুমাত্র একটা লাঠির উপর ভর করে, যে পথে আমরা ভালো স্পোর্টস-সু পড়েও হোঁচট খাই। তাই আমরা সাফ সাফ-ই উনাকে জানিয়ে দিলাম, "আমাদের তো অভিজ্ঞতা নেই এই কাঠের দাম সম্পর্কে, আপনি একটা দাম বলুন, আমি সেটাই দেবো..."। তবুও উনি বেশ কয়েকবার আপত্তি করার পর একবার শেষে ক্লান্ত হয়ে বলেই দিলেন "দিয়ে যাও বিশ-ত্রিশ টাকা..."। মানিব্যাগ বের করে ত্রিশ টাকা উনার হাতে দিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলাম। বেড়িয়ে এসে ফিনফিনে একটা ল্যাম্পপোস্টের তলায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে ভাবলাম, এতগুলো টাকা উনি নিতে অস্বীকার করছিলেন! হ্যাঁ এতোগুলো টাকা! ত্রিশ টাকার অঙ্কটা আমাদের কাছে খুব কম মনে হতে পারে, কিন্তু ওই মানুষগুলোর কাছে একটা দশ টাকার নোটও ভীষণ দামী। এই মানুষগুলির ত্রিশ টাকায় একটা গোটা দিনের পেট চলে যায় এবং তাদের রোজগারও খুব যৎসামান্য, কারণ এই পাথুরে জমিতে চাষবাস করাটা একটু কঠিন, আর উৎপন্ন শস্যের বেশীরভাগটাই দিতে হয় জমি মালিকদের। এখানে আশেপাশের হোটেলগুলিতে আবার খাবার দ্রব্যের দাম ভীষণ বেশী, এক থালা ভাত, ডাল এবং কিছুটা আলু পোস্তর তরকারী খেতে হয়েছে একশো টাকা দিয়ে, সাথে অবশ্য এক্সট্রা কুড়ি টাকায় এক বাটি ভর্তি সুস্বাদু চিকেন পাওয়া গেছে। সন্ধ্যায় একটি নর্মাল সাইজের থালার প্রায় অর্ধেকেরও কম মুড়ি হোটেল থেকে কিনে খেতে হয়েছে পঞ্চাশ টাকা দিয়ে, যার দাম আসলে দশ টাকাও হবে কিনা সন্দেহ। তবে এগুলো কোনওটাই এখানকার আসল দাম নয়, ব্যবসার খাতিরে হয়তো কিছুটা বাড়ানো আছে। কারণ শেষবার যখন গিয়েছিলাম ওই একই জায়গায় একটু অন্যদিকে, তখন ওই একই খাবার পঁয়ত্রিশ টাকায় খেয়েছিলাম একটা ছোট খাবারের দোকান থেকে। খাবারের এই দামের পিছনে প্রধান কারণ ওই জায়গায় আশেপাশে আর কোনও খাবারের দোকান নেই, তাই সমস্ত হোটেল মালিকরা একটা ফিক্সড দাম ঠিক করেই রেখেছেন। সমস্ত হোটেলেই প্রায় খাবারের দামটা একই, খুব বেশী হলে মাত্র পাঁচ টাকার তফাৎ। আসল ব্যাপারটা এখান থেকেই স্পষ্ট আমাদের কাছে। একই পরিবেশে একদিকে ব্যবসায়িক লাভের ফল এবং অন্যদিকে এখানকার সাধারণ মানুষের সাহায্যের সন্তুষ্টি, এই দুই ধরনেরই মনের ছোঁয়া পেয়ে আমাদের বরুন্তি ট্যুর শেষ করে ফিরে এলাম। কিছু শুকনো কাঠের গুঁড়ি অগ্নিদেবের দূত হয়ে আমাদের চিনিয়ে দিলো প্রকৃতির ভালোবাসায় মোড়া একটি ছোট্ট গ্রামের মানুষদের আন্তরিকতা এবং অতিথি আপ্যায়নতা। বেঁচে থাক এই মানুষগুলির ভালোবাসা, সরল হাসিতে মোড়া থাক সমস্তটা গ্রাম। আবারও এই দেওয়াল জুড়ে লিখতে বসবো যদি নতুনভাবে কখনও কোথাও এরকমই কিছু মানুষের ভালোবাসা পেয়ে থাকি।

সত্যি-মিথ্যা

যেই ডাকনামে ভাবি তোমায় এখনও কতদূর,
সেই পথ ধরে নিয়মমাফিক আসেনা সমুদ্দুর,
যেই রাতে পাখিরা ঘুমোয় রূপকথার ঘন নীলে,
সেখানেও পূর্ণিমা দেখি নির্জনে দুজনে মিলে।
এটাই বাস্তব, এটাই সত্যি, আসলে মিথ্যে কথা,
হাজার তারাও দিনের আলোয় জ্বলছে অযথা।
এভাবেই আমি রক্তচাপের হিসেব মেপে চলি,
অপেক্ষাতেও আয়না ছুঁয়ে অনেক কিছু বলি।

Thursday, March 29, 2018

শর্টকার্ট

এখনও তুমি এই কলম ছুঁয়ে
আটকে আছো আমার ব্রেনে,
নাম না করেই বলছি তোমায়,
"J'aime ma tension artérielle"
ভাবছো কিসব আবোলতাবোল
লিখেই চলেছি দেওয়াল জুড়ে,
অচেনা ভাষায় নামটা তোমার
লুকিয়ে রেখেছি কবিতা খুঁড়ে।

যদি ধরতে পারি রোদ, অন্ধকারের প্রতিরোধ।

Tuesday, March 27, 2018

ধূসরে রঙিন

যদি ধরা দাও ধূসরের গায়ে স্মৃতি লেগে আছে কত,
সেখানে তোমার মনের ছোঁয়ায় মুছে যাবে সব ক্ষত,
আমি বসে থাকি জলরাশি কেঁপে এখনও বুকে ব্যথা,
তোমাকে ভেবেই শিকড় ছড়ায় আমার সমস্ত কথা।
একদিন এসো কল্পনা বুকে মুছে দিয়ে স্মৃতির কবর,
তোমায় নিয়েই বাঁচতে চাইছে জীবন্ত আরেক শহর,
কখনও কি তুমি স্বপ্ন দেখো আকাশের পানে চেয়ে?
তোমার কাছেই ফিরতে চাইছি সমগ্র ছায়াপথ বেয়ে।

Monday, March 19, 2018

ভাগ্যের চাকা

আমার সমস্ত বেঁচে থাকা একটি খাতায় লেখা,
পাতার শেষে হঠাৎ তোমার দেওয়া চিঠির খাম,
পরের পাতা ওলটাই, কিন্তু তুমি কোথায়?
তোমার জায়গায় কোনও এক অচেনা নাম,
তুমি তো প্রতিদিন সাজিয়ে মিথ্যে বলতে,
আর আমিই কি একা সাজিয়ে ভালবাসতাম?
গল্প খোঁজো, শব্দ খোঁজো, সবটাই ফেলে দাও,
যেটুকু তোমার ভাগ্যে লেখা সেটাই মেনে নাও।

সূর্যাস্তের রঙ

খোলা আকাশের নীচে ডানা ঝাপটে পড়ে আছি। পালকে কাঁচা লাল আর ভাঙা বাক্য। এখনও ভাবছি উড়োজাহাজের কাঁধে চড়ে ব্যস্ততা ফিরবে সঙ্গে আমার ঠিকানা। ওই তো সূর্যাস্তের রঙে মিশে যাচ্ছে আমার ডানা মেলার ইচ্ছেগুলো।

Friday, March 16, 2018

ঝাপসা

আমাদের দেখা হতে পারে
যেকোনো রোদেলা দিনে,
সেখানে কথা জমতে পারে
আকাশের ঘেরা নীলে।
এই রাতে অভিমান না করে
ভালো থাকিস প্লিজ,
আমি ফিরে যাবো, তারপর?
চশমাটা মুছে নিস।

সীমার বাইরে

আমি জায়ান্ট হুইলে আটকে গেছি,
তোমার স্বপ্ন উড়োজাহাজের ডানায়,
যতবার তোমাকে ছুঁতে হাত বাড়াই
আবদ্ধ হই চেনা সীমানার তালায়।
এখানেই আমি জীবিত, এখানেই তুমি বদলিও হাত,
তুমি হেঁটে যেও, কেটে যাক এভাবেই প্রতিটা রাত।

Wednesday, March 14, 2018

যুদ্ধ জীবন

এখান থেকেই হাঁটার শুরু
আলোকবর্ষ দূরে,
শিকল ছেঁড়ার শব্দ উঠুক
বদ্ধ জীবন জুড়ে।

Tuesday, March 13, 2018

অভ্যাস

আমি ডুবে গিয়েছিলাম
যে জলে রোদ ভাসে,
সেখানে মরিনি আমি
বিষ জল নিঃশ্বাসে।
আমি বেঁচে আছি আজ
বিকেলের ভেজা ঘাসে,
যেখানে হেঁটেছি আমরা
অতীতের অভ্যাসে।

Wednesday, March 7, 2018

পলাশের অভিমান

মনমরা শীত আর তির্যক সূর্য, দুজনেই একে অপরকে চায় কিন্তু জীর্ণ পলাশের ডালে লাল ছড়িয়ে পড়ে আর জন্ম দেয় নতুন মুহূর্তের। মুছে যাওয়া বিকেলের দৈর্ঘ্য বাড়ে, ওরা আরও বেশীক্ষণ একটু নরম রোদে রঙ মাখতে পারে। মগজে তখন শব্দের লাইব্রেরী অথচ নিয়ম মেনে নীরবতায় মগ্ন দুটি অচেনা হাত, যারা একে অপরকে স্পর্শ করতে চায় কিন্তু সাহস পায় না। এভাবেই বেশ কিছুটা সময় কেটে যায়, আকাশের বুকে বেগুনি তরী ভেসে আসে অজস্র জোনাকি আর তারাদের সাথে নিয়ে। দুজনের ঘরে ফেরার তাড়া, একজন উঠে দাঁড়ায় ব্যাগ কাঁধে নিয়ে, অপরজন আলতো শরীরে প্রস্তুত হয় খুলে রাখা চটিতে পা রাখার। পলাশের অভিমান ভাঙে, ধুলোমাখা চটির গর্ভে খসে পড়ে এক সদ্য বিকশিত পাপড়ি। মানুষটি খুলে রাখা সেই চটিতে পা রাখতে গিয়ে হঠাৎ থমকে যায়, শক্ত হাতে কাঁধে ভর দেয় পাশের মানুষটির। এটাই তাদের প্রথম স্পর্শ, যার সাক্ষী একটি শয্যাশায়ী পাপড়ি আর দখিণা হাওয়া। এরপর তারা হাঁটতে শুরু করে, অনন্তকাল যাবৎ হেঁটে যাবে এই পথ। সন্ধ্যার তরীতে ভেসে আসা জোনাকিরা আজ উড়তে শিখে গেছে, পথের অভিমুখে উড়ে বেড়ায় আর আঁধারের শূন্যতা মুছে আলোকিত করে তাদের পথ। এভাবেই প্রত্যেক শীতের শেষে ঋতু বদলায়, দুটি মানুষকে একসাথে চলার শপথ করিয়ে বেগুনী তরীতে হলুদ বিকেলের শেষে মিলিয়ে যায় বসন্ত।

Sunday, March 4, 2018

ভাঁটার টান

ও নদী তোর গলার স্বরে
আমার মনের স্বাদ,
ও নদী তোর বুকের ভিতর
আমার ইচ্ছে বাদ।
তুই ঢেউয়ের স্বরে বালি ওড়াস
আমার পথ চেয়ে,
তোর ভাঁটার টানেও সাঁতার কাটি
উল্টো স্রোত বেয়ে।
ও নদী তুই একটুখানি
আমার ঘরে আয়,
ও নদী তোর ভাঁটার টানে
মনটা ভিজিয়ে যায়।
তুই গল্প বলিস অনেক রাতে
আমার দুচোখ ছুঁয়ে,
তোর চোরা স্রোতের দাগগুলো সব
আমার বুকেই শুয়ে।

Saturday, March 3, 2018

রঙ তুলি

কথা দিয়েছিলাম অনেক কিছুই
পারিনি কিছুই রাখতে,
রঙ-তুলি দিয়ে মনের ভিতরে
কখনও কি আমায় আঁকতে?

Sunday, February 25, 2018

জীবন চুরি

সমুদ্দুরের গল্প শোনো
ঢেউয়ের ভিড়ে লুকোচুরি,
একটা ঢেউয়ে ঝিনুক কোড়ায়
অন্য ঢেউয়ে জীবন চুরি।

ফিরে আয় তুই

যে প্রভাতে আজি এ শহরে মন
নাম লিখে গেছে গাড়ি,
সেই পথগুলো ধুলো মেখে গায়ে
ভুলে গেছে তোর বাড়ি।
আমি হেঁটে চলি কাগজের ফাঁকে
ঠিকানা বদলে গেছে,
আজ আকাশের নরম দু'চোখে
পূর্ণিমা লেগে আছে।
তোকে কিছু কথা বলবো ভেবেছি
সরিয়ে রেখেছি মনে,
আজ রাতে কেউ গল্প শোনে না
ভাঙা এই টেলিফোনে।
এভাবেই দিন কেটে যায় রোজ
তোর চিঠি পড়ে পড়ে,
আরও একবার ফিরে আয় তুই
ফাগুন হাওয়াতে বয়ে।

Saturday, February 24, 2018

জন্ম নতুন

জ্বলবো আবার নিভেও যাবো
রাতের আকাশ অন্ধ করে,
তোর পথেতে মোম জ্বালাবো
ফাগুন হাওয়ায় মুক্ত হয়ে।
আমি কে তুই জানবি না, নাকি
জানতে চাস না ইচ্ছে করে,
এখনও কি তুই আমায় খুঁজিস
জোনাকির ওই ধরপাকড়ে?
তোর জন্যেই বাঁচছি জীবন
আসছি ফিরে নতুন করে,
এই পৃথিবীতে তোর মায়াতেই
এসেছি এবার জোনাকি হয়ে।
চিনতে পারলে আটকে রাখিস
তোর ছোঁয়াতে বন্দী করে,
নয়তো আবার প্রান হারাবো
একলা রাতে পাথর হয়ে।

Friday, February 23, 2018

বৃষ্টির প্রেম

দিনের শেষে কালবৈশাখী
তোমার আমার শহর জুড়ে,
বৃষ্টির প্রেমে ভাসবে মাটি
দুইটি দেহের কবর ছুঁয়ে।

Thursday, February 22, 2018

ক্লাসরুম

আমায় যখন বিচার করো
আমার রূপের নিন্দা করে,
আমায় কেন খোঁজো তুমি
ক্লাসরুমের ওই অন্ধকারে।

প্রতিদান

ভাবছ এখন নেই বলে আমি
যা খুশী তাই বলবে ওকে,
যখন তোমার কঠিন সময়
চোখ বুজে তুমি ডাকবে কাকে?

সহ-সৈনিক

আমার কাঁধেই জন্ম নিচ্ছ
বাড়ছ তোমার জীবন পাতায়,
যতই আমায় মন্দ বাসো
তোমার শব্দ আমার খাতায়।
আমার সাথেই চলছ এ পথ
তোমার যুদ্ধের প্রতি বাধায়,
যুদ্ধে জয়ী হলেই তুমি
কামান দাগবে আমার মাথায়।

Sunday, February 18, 2018

দূর অজানার দেশে

প্রত্যেক সকালে উঠে মুখের কাছে এক কাপ চা/ কফি না হলে দিনটা ঠিক শুরু হয় না, আর ঘুমনোর আগে ডিনারে অবশ্যই ভালো কিছু চাই-ই চাই! এটাই আমাদের অভ্যাস, এভাবে দুটো সূর্যোদয়ের মাঝের ২৪-টা ঘণ্টা বেশ নিশ্চিন্তেই কাটিয়ে দিতে পারি পরের সকালের bed tea-টা হাতে পাওয়ার আশায়। এটাই হয়তো আমার কাছে necessity, আর luxury-টা তো আরও অনেক বেশী কিছু। আমরা হয়তো ভাবতে ভুলে যাই আমার এই necessity-টাই কোনও এক মানুষের কাছে হয়তো ভীষণ luxury-র থেকে কম কিছু নয়। হ্যাঁ, আজ তবে সেই মানুষগুলোর কথাই একটু আলোচনা হোক।
প্রত্যেক বছরের শেষে যখন শীতটা বেশ অনেকটা দিনের আলো চুরি করে ফেলে, ঠিক সেই সময় আমরা বেড়িয়ে পড়ি দূর অজানার সন্ধানে। আমরা মানে এখানে The Front Point-টীম। যে অজানার প্রান্তরে গিয়েই আমরা পড়ি, কিছু উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিবার যাই আমরা। তার মধ্যে প্রাথমিক কিছু উদেশ্য হল, ১) চেনা জগতের বাইরে নিজেকে পরিচিত করে তোলা, ২) নিজের কাজটা নিজেই গুছিয়ে নেওয়া, ৩) যে স্থানে আমরা যাচ্ছি সেখানকার সংস্কৃতি এবং মানুষের দিনযাপন সম্পর্কে একটা জ্ঞান অর্জন করা এবং তাদের দিকে কিছুটা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। এই আমাদের উদ্দেশ্য এবং এটার মধ্যেই আমাদের সমস্ত ভালোলাগা মিশে থাকে।
সেই মানুষগুলোর সাথে যখন আমরা কথা বলতে যাই, অনেক বিষয়ে খেয়াল রেখে আমাদের কথা বলতে হয়, কখনই যেন তারা আমাদের থেকে নিজেদের মধ্যে কোনও দূরত্ব খুঁজে না পান। এ ক্ষেত্রে নিজে কতটা স্মার্ট, সেসব দেখাতে গেলে দূরত্ব বাড়ে, সেই মুহূর্তে গাম্ভীর্য কমিয়ে মুখের হাসিটাই আমাদের শ্রেষ্ঠ এক্সপ্রেশন। এভাবেই গল্প জমে ওঠে, তাদের বেঁচে থাকা, সুখ দুঃখের কথা শেয়ার করেন আমাদের সাথে। তারা গল্প করেন কীভাবে ফাগুনের মহুয়ায় তাদের আসর জমে ওঠে দখিণা হাওয়ার কোলে, তাদের উৎসবের দিনের মুহূর্তগুলো কতটা প্রিয়, বন্য জন্তুর উৎপাতে সারা বছরের ফসল নষ্টের ব্যথা, বিয়ের আগে পণ দেওয়ার রীতি নীতি, ইত্যাদি অনেক কিছু। কাউকে ঘাঁটানো আমাদের স্বভাব নয়, দিন বদলের স্বপ্ন দেখাতে আমরা যাইনি ওখানে, তাই প্রতিবাদ করে তাদের সংস্কৃতির বদল ঘটানোর চেয়ে আমরা বরং অবাক হয়ে গল্প শুনি আর হাতের কাগজে রিপোর্ট তৈরি করি। এভাবেই সময় ফুরিয়ে আসে, আমাদের ফিরে আসতে হয়, কেউ কেউ তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিজেদের টিফিনের টাকা জমিয়ে বাচ্ছাদের বই-খাতা কিনে দেয় আবার কেউ কেউ চেষ্টা করে নিজেদের ছোট হয়ে যাওয়া পুরাতন জামাকাপড় দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর। এভাবেই একটা ক্যাম্প শেষ হয়ে যায়, আবার অপেক্ষা এক বছরের, বাড়ি ফিরে ক্যামেরায় ধরে রাখা সেই মানুষগুলোর মুখের হাসি আমাদের এক পরম শান্তি উপহার দেয়। luxury আর necessity-র সংজ্ঞাটা আরেকটু ভালো করে পড়ে ফেলি কোনও অদৃশ্য অধ্যায়ের পাতা থেকে আর শিক্ষাটা জমিয়ে রাখি বুকের ভিতরে উত্তাপের ছায়ায়।

আমার ঠিকানা

আমি যেখানে থাকি, তার পূর্বে একটা বিশাল পাহাড়, প্রত্যেক সকালে আমাকে অন্ধকার করে রাখে। আমি কিছু বলি না, এই আছিলায় একটু বেশীক্ষণ ঘুমোতে পারি। প্রতি ভোরে ওপাশ থেকে শুনতে পাই একটা খরস্রোতা নদীর শব্দ, বয়ে বেড়ায় বুকে নিয়ে আমার সমস্ত অভিমান আর তার চিৎকার আমার কাছে খুব একঘেয়ে, যারা ছেড়ে যায় তাদের কাছে ভীষণ মধুর। এখানেই আমাকে থাকতে হবে, অতএব এই শব্দ, এই ছন্দ সব নিয়েই আমার লেখা, সব নিয়েই আমার দিন গোনা। আমার জীবনে কোনও প্রেম নেই, এই ঘরের মাঝখানে আমি একা থাকি, সঙ্গে কিছু ছারপোকার কামড় আর লতা পাতার উপর ভর করে বেড়ে ওঠে আমার জীবন। কোনও এক বিকেলের হলুদে রোদ ছুঁয়ে কেউ আমাকে বলে গিয়েছিলো পাহাড়ের ওপারে যেতে। তাহলে কি সেখানেই আমার সমস্ত না পাওয়া লুকিয়ে? কিন্তু আমি নিতান্তই মূর্খ, কি পেয়েছি আর কি পাইনি সেটাই জানি না। এই প্রশ্নের মাঝে ভুলে যাই তার নাম, কেটে যায় অনেক দিন। আমি আবার একা। পরে কোনও এক ভোরের পাখির মুখে শুনি পাহাড়ের ওপাশে লুকিয়ে আছে সমস্ত অহংকার, তা সে পাহাড় জয়ের নাকি নতুন পৃথিবীর আমি জানি না। যেতে ভয় পাই, পাছে আমি গ্রাস হই। নিজের পরিসরে থাকি, হিজিবিজি কেটে লিখে রাখি আমার মাটির ঘরের দেওয়ালে সমস্ত ভালোলাগা। প্রত্যেক রাতে স্বপ্নে দেখি এক অজানা মুখ প্রশ্ন করে, এভাবে আর কতদিন? আমি কিছুই বলতে পারি না, স্বপ্নের শেষ এখানেই। এটাও কারোর স্বপ্ন হতে পারে, নিজেই ভাবি আবার অন্য কাজে মন দিই। যাই হোক, আমার চার দেওয়ালে এখনও সভ্যতার ধোঁয়া এসে পৌঁছয়নি। আমি এখানে মাটির গন্ধেই বন্দী থাকতে ভালোবাসি। রাত হলেই বাইরে খাটিয়া পেতে শুয়ে পড়ি আকাশের বুকে রঙ দেখবো বলে, সবাই বলে রাতের আকাশ ভীষণ কালো। কই, আমি তো স্পষ্ট দেখতে পাই কারা যেন তারা সাজিয়ে ছবি এঁকে দিয়েছে রঙ বেরঙে। ওই তো একটা যোদ্ধা পায়ের কাছে কুকুর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ওই তো দূরে সাতজন ঋষি বসে কিছু একটা গভীর চিন্তা করছে। নিতান্তই মূর্খ আমি, কারোর নাম জানি না। শুধু জানি, যে রাত্রে আমি পাহাড় টপকে ওপাশে যাবো ভোর দেখবো বলে, সেদিন রাত্রেই এই আকাশের প্রত্যেকটা তারা খসে পড়বে ওই পাহাড়ের মাথায়। অতএব আমাকে এভাবেই চলতে হবে। আজেবাজে লিখলেই লেখক হওয়া যায় না, ঠিকানা বদলে ফেলতে গিরগিটি হওয়াটা প্রয়োজন। আমি জানি তা কোনোদিনই পারবো না, সুতরাং এটাই আমার ঠিকানা আর ওই যে গল্পকার খরস্রোতা নদী, আমি তারই শ্রোতা।

Saturday, February 17, 2018

শূন্য রাজপ্রাসাদ

যতদূর প্রেম তোমার প্রিয়
তার অর্ধেক আমায় দিও,
আমার বুকে শূন্য রাজপ্রাসাদ,
ডাক পিয়নে খবর নিও,
একটু বাঁচার ইচ্ছে দিও,
বৃষ্টি ভেজা আমার রাস্তা-ঘাট।

অন্য দেশ

আমাদের অন্য দেশ,
এভাবেই লাগছে বেশ,
চল আকাশ খুঁজে হারিয়ে যাই,
যেখানে তোর আবেশ
আমারও লাগবে বেশ,
সেখানে আমি রোজ হারাতে চাই।

Monday, February 12, 2018

ছায়াপথ

যখন তোমার সূর্য মাথায়
তখন আমি প্রখর রোদে,
পুড়ছি তাপে ভীষণ ব্যথায়
তোমার উপর ছায়ায় স্রোতে।
লালের আভা বুকে নিয়ে
দিনের শেষে আকাশ শুয়ে,
ছায়ার শরীর বাড়ছে ধীরে
তোমার আমার হৃদয় ছুঁয়ে।
এখন আমি অনেক দূরে
যাচ্ছি হেঁটে আলোর ভিড়ে,
যতই দূরে যাই না আমি,
আমার ছায়া তোমায় ঘিরে।

Saturday, February 10, 2018

ধূসর মায়া

বইয়ের ভাঁজে শুকনো গোলাপ
গন্ধহীন এক ধূসর মায়া,
অনেক প্রমিস ভিড়ের আড়ালে
শহর জুড়ে প্রেমের ছায়া।

Thursday, February 8, 2018

শেষ চুম্বন

শেষ চুম্বন মিলিয়ে গেছে আমার ঘরের এক কোনে,
ক্ষতয় মোড়া মিথ্যা প্রেম আজ পড়ছে চুঁয়ে তোর মনে।

বাঁচার তাগিদ

এভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় না,
আঙুলের প্রেমে তালা ঝুলছে,
তোমার হাত অন্য হাতে বন্দী। 
আমি এখনও স্বপ্ন দেখি বাঁচার, 
যেভাবে দুটি মশারির আত্মা 
জুড়ে গিয়েছিলো একটি ঘরে। 
আমার শহরে বসন্ত আসেনি, 
কোকিলের পালকে চিঠি আসে 
আমাকে ফিরে যেতে বলার। 
আমার অপেক্ষায় বিশ্বাস নেই, 
নরম হাতের আদরে গাল মুছবো, 
রুমালের প্রেম জাগবে দু'চোখে। 
একটিবার আমাকে সত্যি বলবে, 
তুমি কি আসবে আজ রাত্রে? 
তোমার ফেলে যাওয়া অন্ধকার 
আমি সযত্নে তুলে রেখে দিয়েছি 
আমার ডায়েরির সাদা শূন্যতায়। 
এসো, চুপিসারে নিয়ে চলে যাও, 
আমার গালে দুঃখের ভাঁজ ছুঁয়ে 
রেখে যাও তোমার অস্তিত্বের দাগ। 
আমার এখানেই থাকার কথা ছিল, 
মাঝরাতে উড়োজাহাজের গর্জন, 
তুমি চলে গেছো অন্য ঠিকানায়। 
পরের সকালে আমি রোদ গুনি, 
প্রেম খুঁজি এই সভ্যতার কোলে, 
বেঁচে আছি, বেঁচে থাকবো বলে।

Tuesday, February 6, 2018

নতুনের দরবারে

বাসবে একটু ভালো? আমিও বাসবো।
তোমার পিঠের চাদরে রাখবো হাত,
কাঁধের উপর শুইয়ে রাখবো মাথা,
পারবে কি ভুলিয়ে রাখতে আমায়?
আমার অতীতের পুরনো বুকের ব্যথা।

অধিকার বোধ

আমি 'না' বলার অধিকার হারিয়েছি,
খুঁজে দেবে?
দুঃখিত, আমি তো নিরস্ত্র সৈন্য,
তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাও,
আমি আহতের সেবা করতে ব্যস্ত।

Tuesday, January 30, 2018

বন্দী হওয়ার সন্ধানে

যেকোনো দিন ফিরে আসা যায়
শূণ্য খাঁচার কোলে,
উড়ে গেছো তুমি অন্য খাঁচায়
বন্দী হবে বলে।
সময় ফুরোয় বেঁচে থাকার
বয়স মাপার কলে,
মৃত্যু হওয়া মুহুর্তদের আজ
ভাসিয়ো নদীর জলে।

Monday, January 29, 2018

নদী চরে মৃত্যু

আমার চেনা পরিসর আমাকে দুঃখ দেয়,
যেখানে নদী কাঁদে সেখানে মুছে যায় অভিমান,
আমিও পারি চোখ এড়িয়ে ফিরে যেতে
কিন্তু সে রাস্তা আমার বন্ধ, পথ আটকে ফাঁকা বেঞ্ছি।
শীতের দুপুরের রোদ আমার বড্ড প্রিয়,
তুমি চাইতে গাছের ছায়া আর ঠাণ্ডা মনখারাপ,
আমি আর যাই না ওই ঘাটে, নদীর বুকে কষ্ট জমে।
আমাদের কথা ছিল শহর ছেড়ে যাওয়ার,
আমার প্রিয় একজন মানুষ বলেছিলেন
নতুন শহরে কিন্তু নদী নেই, নেই মনখারাপের মলম।
তবুও আজ নতুন শহর আমার কাছে ভীষণ প্রিয়,
কারণ এই নদীর পাশেই আমার প্রেমের মৃত্যু,
ফিরে যেতে চাই অন্য এক শহরের উঠোনে
যেখানে মাঠ জুড়ে বেড়ে ওঠে শুকনো হৃদয়ের তৃষ্ণা।
কষ্ট মুছে ফেলার কোনও তাগিদ থাকবে না আমার,
কারণ যে শহরে ভালোবাসা নেই, সেখানে কষ্ট?
আসলে পৃথিবী আজ খাঁটি প্রেমের খোঁজে ব্যস্ত।

অন্য পৃথিবী

এ এক অন্য পৃথিবী, এখানে বসন্ত আসে না,
শীত এসে সমস্ত পাতা কুড়িয়ে চলে যায়,
প্রতি ভোরে পাখিদের কলরব নেই
শুধু সমুদ্রের ঢেউ ভাঙার চিৎকার আর
আকাশ জুড়ে তোমার রঙে সাজানো রামধনু,
আমি খেলা করি ওই রঙ নিয়ে
ভাঙা ঢেউয়ের পিঠে চড়ে।
শাঁখের শরীরে আঁচর কেটে লিখি
আমাদের ফেলে আসা গল্পগুলো।
এখানে নিয়ম ভীষন আলাদা,
গল্পকার কথা লেখেন আর
চরিত্র সাজান পাঠক।
প্রতি শীতের শেষে আমি ঝিনুক কোড়াই
মুক্ত নয়, আমার মনটা রাখবো বলে,
একটু বসন্ত দিতে পারো এই শীতের শেষে?

প্রিয় সময়

রাতগুলো খুব প্রিয় আমার কাছে,
আলো নেই, শুধুই অন্ধকার,
মন কাঁদে না, মিশে যায় আঁধারে।
তুমি প্রবেশ করো মশারি বেয়ে,
চাইলে ভেঙে ফেলতে পারো মন,
বিকেল রোদে আমায় হারিয়েছো
নতুন আলোর রঙ দেখবে বলে।
ভোর দুজনেরই জীবনে হয়,
তোমার সকালে নতুন সূর্যোদয়,
আমার জীবনের ভাঙা অধ্যায়।

Sunday, January 28, 2018

রাতের প্রশ্ন

এই রাত ঘুমহীন,
বুকের ভিতর একটা চিনচিনে ব্যথা
আর সাতটা বছরের স্মৃতি।
ভুলতে পারতিস সেই ক্লাস নাইনের
ট্রেনের সিটে পাশাপাশি আলাপ?
ভুলতে পারতিস সেই ক্লাস টেনের
অঙ্ক বোঝার অজুহাতে ফোন করা?
ভুলতে পারতিস ক্লাস ইলেভেনে
মোবাইলের ব্রান্ড নিয়ে ঝগড়া করা?
ভুলতে পারতিস ক্লাস টুয়েলভের
স্কুল পালিয়ে দেখা করা প্রেমগুলো?
ভুলতে পারতিস কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে
আমাদের কলেজের বাইরে দেখা করা?
ভুলতে পারতিস সেকেন্ড ইয়ারে
আমাদের কলেজ ফেস্টে আসা?
ভুলতে পারতিস থার্ড ইয়ারে
তোর গিফট্ করা প্রিন্টিং কাপ?
ভুলতে পারতিস আমাকে?
যদি রোজ আসতাম তোর স্বপ্নে,
চোখ খুলে আমাকে খুঁজতিস?

Saturday, January 27, 2018

তোমাকে লেখা চিঠি

প্রিয়,
তুমি ছেড়ে গেলে,
জানো কতটা দিয়ে গেলে আমায়?
এখন আমার একশো দুই জ্বর,
কীভাবে হল জানি না,
আমি এখনও দিব্বি কাজ করছি,
আমার শরীরে সামান্য জড়তা নেই।
আগে অহেতুক বুকে লাগতো,
ব্যথায় কুঁকড়ে শুয়ে থাকতাম,
আজ হাজারটা বারুদ
একসাথে চিৎকার করছে বুকে,
কোনও ব্যথা নেই, একটা আনচান শুধু।
ভালো তো দুজনেই বাসতাম,
চাওয়াটা হয়তো আলাদা ছিল,
একজন ভালো থাকতে চাইতো,
আর একজন ভালো রাখতে।
ভিতরে একটা অলীক কষ্ট,
প্রকাশ করতে পারবো না জানি,
এরই নাম তবে ভালোবাসা?
এরই নাম তবে ভালো থাকা?
তাহলে আমি এরকমই থাকতে চাই,
শরীরে অসহ্য কষ্ট, কোনও অনুভূতি নেই।
তুমি আমাকে এতটা সহ্যশক্তি দিয়ে গেলে,
ধন্যবাদ তোমাকে, কৃতজ্ঞ তোমার কাছে।
প্রিয়, তুমি ছেড়ে গেলে,
জানো কতটা দিয়ে গেলে আমায়?
অনেকটা অনুভূতি আর একঘর শূন্যতা।

Thursday, January 25, 2018

বসন্তের নিঃশ্বাস

যতটা আকাশ মাথার উপর
উড়তে চাইছ তুমি,
তার অর্ধেক রক্তাক্ত আর
বাকি অর্ধেক খুনি।
সেই বিকেলেই প্রেমের মেজাজ
চূড়ান্ত অভিমানী,
আমার শরীর মনের বাইরে
নিরস্ত্র সৈন্য আমি।
যতটা পথ পেড়িয়ে এসেছ
পদচিহ্ন ফেলে সুখে,
আশা করি পথ বাকিটুকু হোক
কল্পনার অভিমুখে।
এখন বিকেল বসন্তহীন
সন্ধ্যা নামার মুখে,
শুকনো পাতায় মিলিয়ে গেছে
দাগগুলো পথের বুকে।

Saturday, January 20, 2018

স্মৃতির পাহাড়

শেষ রাতের ওই নিয়ন আলো
চোখ ভিজিয়ে নিভলো সুখে,
আমার মনের স্মৃতির পাহাড়
ভাঙলো শব্দে তোমার বুকে।
তোমার ছায়ায় অন্য মানুষ
হাঁটছ তুমি পথের বুকে,
চোখ সরিয়ে আবেগ ভুলে
অল্প হাসি আমারও মুখে।

দিনের ছদ্মবেশ

চোখের ভাষায় লেখা
পড়তে পারো নিজে,
সাজাবো প্রেমের মেলা
তোমার রক্তে মিশে।
নিশীথ রাতের বেলা
তোমার দু'চোখ ভিজে,
দেখবো তোমায় একা
দিনের ছদ্মবেশে।

Friday, January 19, 2018

মনের দুয়ার

শান্ত তোমার দুয়ার রেখে
রাখাল বাঁশি বাজিয়ে সুরে
সাঁঝ আকাশের ক্লান্ত মেঘে
ভাসিয়ে ছিলাম ভেলা,
আকাশ পানে তোমায় চেয়ে
মেঘের কালোয় আঁধার বেয়ে
তোমার উঠোন অন্য সাজে
কালবৈশাখীর খেলা।
আবদার আর নেই তো আমার
অধিকারটাও এখনও তোমার
শব্দের তরী বাক্য বেঁধে
বুকের ভিতর ব্যথা,
স্রোতহীন এই আবেগ জোয়ার
আঁধার বুকের শূন্য পাহাড়
কাজের ফাঁকি ভিড়ের মাঝে
তোমায় ভাবি অযথা।

Monday, January 15, 2018

বন্দী শিকড়

মেঘ খুঁজছে বন্দী শিকড়
বৃষ্টি নামবে রাতে,
গাছের পাতায় শীতের শহর
ঘুমিয়ে অজুহাতে।
ঘড়ির কাঁটায় চোখ টলমল
অভিমান বুক ভরে,
এখন তো কেউ প্রেম দেয় না
আগের মতন করে।

Saturday, January 6, 2018

বসন্তের রশ্মি

তোমার ওড়ার স্বপ্নগুলো এখনও এ বুকে বন্দী,
কিছুটা বাঁচার তাগিদ কিছুটা বেঁচে থাকার সন্ধি,
আলো জ্বালো তুমি, অন্ধকার মনুষ্যত্বের রাতে,
বসন্তের রশ্মি লুকিয়ে তোমার কল্পনার প্রভাতে।

Friday, January 5, 2018

আগুন্তুক

তুমি মায়াবি রাতের এক উজ্জ্বল তারা,
মোহনার ভোরে খসে পরেছিলে আমার বুকে,
কথা ছিল আমাকে পথ দেখাবে
আঁধার সরিয়ে তোমার জলন্ত আগুনের সুখে।
তোমাকে জ্বালিয়ে রাখতে পারিনি,
বছরটা শেষ হয়ে গেছে বয়সের ওজনে,
কিছুটা পড়ন্ত রোদ এখনও বাকি,
চলো গায়ে মেখে ফিরে যাই হাত ধরে দুজনে।

Tuesday, January 2, 2018

সাজানো প্রহর

তুই শব্দ সাজাস গাছের ছায়ায়
কুয়াশায় ভিজে শহর,
ভোরের আলোয় চোখের তারায়
তোর সাজানো প্রহর।